:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
টানা তাপপ্রবাহের পর শনিবার (১৮ মে) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি ও বজ্রপাতে চার জেলায় আটজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে নরসিংদীতে চারজন, টাঙ্গাইলে দুইজন, গাজীপুর ও ময়মনসিংহে দুইজনের মৃত্যু হয়।
নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ একইস্থানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। এ ছাড়া একই সময় শহরের হাজীপুরে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও একজন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ও হাজীপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কামাল মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম (৩৫), তার ছেলে ইমন মিয়া (১০), ধানকাটা শ্রমিক রায়পুরার বাঘাইকান্দি এলাকার হাতেম আলীর ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২০) ও হাজীপুরের মোসলেহ উদ্দিন (৫৫)।
নরসিংদী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই খালাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদরের মৃত আয়নাল হকের ছেলে আমির হোসেন (৫২ ) ও মৃত নূর হোসেনের ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫)।
স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে আমির ও আফজালসহ কয়েকজন শ্রমিক আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতেন। শনিবার ভোরে বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে ছয়জন শ্রমিক ধান কাটতে যান। পরে বৃষ্টি ও বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছোহরাব আলী জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় হযরত আলীর ক্ষেতের ধান কাটতে যান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। পরে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ফাতেমা আক্তার উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামের মো. নূর হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তার মা ফাতেমা আক্তার সকালে নানা বাড়িতে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। ঝড়-বৃষ্টি আসছে দেখে উঠান থেকে তিনি ধান উঠাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তার মাকে মাটিতে পরে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানসেন চৌধুরী বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বৃষ্টির মধ্যে উঠান থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ মে) সকালে উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের ধোপাঘাট গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত গৃহবধূ হাছিনা (৩৮) ওই এলাকার গ্রাম পুলিশ কাঞ্চন মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সানিব মিয়া জানান, সকালে বৃষ্টি শুরু হলে হাছিনা গরু আনতে উঠানে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গফরগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান খান বলেন, বজ্রপাতে নিহত গৃহবধূর লাশ হস্তান্তরের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।