:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তবে এখনো এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে আজ রাতের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে। সেই হিসেবে সোমবার থেকে তার অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) শুরু হবে।
নতুন পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে জোর গুঞ্জন চলছে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বিসিএস ১৩তম ব্যাচের জসীম উদ্দিনের নাম। সম্প্রতি তাকে ঢাকা ফেরার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হেলিকপ্টার থেকে গুলির ঘটনাকে অস্বীকার করে আলোচনায় আসেন মাসুদ। ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর থেকেই পররাষ্ট্র সচিবের বিদায়ের ব্যাপারে দাবি তোলা হয়। অবশেষে তার নাটকীয় বিদায় ঘটলো।
২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের ২৬তম পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। আগামী ডিসেম্বরে তার বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তার আগেই তাকে বিদায় নিতে হচ্ছে।
২০২২ সালের নভেম্বরে অবসরে যান মাসুদ বিন মোমেন। পরে বিদায়ী সরকার তাকে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করে। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নানা ভূমিকা পালন করে তিনি আলোচিত হন। প্রভাবশালী নীতিনির্ধারণী কূটনীতিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
গত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার আগে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে দৌড়ঝাপের কারণে মাসুদ বিন মোমেনকে ‘অ্যাক্টিভিস্ট ডিপ্লোম্যাট’ আখ্যা দিয়েছিল ভারতীয় গণমাধ্যম।
পেশাদারত্বের বিপরীতে বিবেক-বিবেচনাহীনভাবে শেখ হাসিনার ক্ষমতা জোরালো করতে জোরালো ভূমিকা রাখেন। ছাত্র-জনতার সর্বাত্মক আন্দোলনের বিরুদ্ধেও তিনি ছিলেন দৃশ্যমান ভূমিকায়।
মাসুদ বিন মোমেন পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। কর্মজীবনে কূটনীতিক হিসেবে তিনি ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন।
এর আগে, তিনি জাপান ও ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।