■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের দুর্ঘটনার চার মাস পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়্যিবা মেহজাবিন (১১)। বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
ছাড়পত্র দেওয়ার সময় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন জানান, সায়্যিবার ২২ শতাংশ দগ্ধ ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ১২৮ দিনের এই যে যাত্রা, রোগী হিসেবে সে ছিল খুবই ক্রিটিকাল। প্রাথমিক দিকে ওর শারীরিক যে কন্ডিশন ছিল, সেগুলোর জন্য নানান ডিপার্টমেন্টকে ইনভলভ হতে হয়েছে। অন্য মানুষের শরীরের চামড়া এনে ওর শরীরে লাগানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সায়্যিবার শরীরে মোট ৭২ বার ড্রেসিং করা হয়েছে এবং ৬ বার চামড়া প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে—যার জন্য অন্য মানুষের শরীরের চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েক দফায় তাকে আইসিইউতেও থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এর আগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন গুরুতর দগ্ধ হওয়া আরও ৩৫ জন শিক্ষার্থী। বর্তমানে আবিদুর রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী ভর্তি আছে। তার শরীরেও ২২ শতাংশ দগ্ধের ক্ষত ছিল। খুব শিগগিরই তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. রবিউল করিম খান পাপন বলেন, ওদের চিকিৎসা জার্নিটা এখনও শেষ হয়নি। ওরা সাইকোলজিক্যাল ট্রমা আজীবন বহন করবে। তবে আমরা ওদের পরবর্তী চিকিৎসা নিশ্চিতের চেষ্টা করব।
চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সায়্যিবার মা শারমিন ইয়াসমিন বলেন, মেয়েকে নিয়ে আমরা একটি ট্রমার মধ্যে ছিলাম। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছেন ওর জন্য। আগামী জানুয়ারিতে সে আবার স্কুলে যেতে পারবে বলে চিকিৎসকরা বলেছেন।
তিনি বলেন, গত পরশুদিন তার ক্লাশ পার্টি ছিল। সে বলছিল, আম্মু আমি ক্লাশ পার্টিতে যাব। ডক্টরকে বলো না; আমাকে ছুটি দিতে।
সায়্যিবার বাবা মো জহুরুল ইসলাম জানান, তাদের বাসা তুরাগের নলভোগ এলাকায়।
গত ২১ জুলাই দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৭ জনই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ছিল।
