■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক হয়েছেন নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হয়েছেন আখতার হোসেন।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে তৈরি মঞ্চ থেকে নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
শহীদ ইসমাইল হাসান রাব্বির বোন মিম আক্তার দলটির নাম ঘোষণা করেন। মিম আক্তার বলেন, আপনাদের মনে আছে, গত ৫ আগস্ট দুই বোনের কাঁধে ভাইয়ের লাশ৷ সে দুই বোনের মধ্যে আমি একজন। ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটে নাই। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলের নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণা করছি।
নতুন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্যসচিব ডা. তানসিম জারা, নাহিদা সরওয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান মাসউদ।
যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সরোয়ার তুষার, মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তাসনুভা জেবিন, সুলতান মো. জাকারিয়া, আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ নাসিম, এহতেশাম হক এবং হাসান আলী।
যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, রশিদুল ইসলাম রিফাত, মাহিন সরকার, নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসেন সিএফ, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত।
দপ্তরে সংযুক্ত আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, ফরিদ উদ্দিন, ফরহাদ আলম ভূঁইয়া, মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মঈনুল ইসলাম তুহিন, মুশফিক-উস সালেহীন, জাহিদুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম মুসা, হুমায়ুরা নূর, মুশফিকুর রহমান জোভান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আহনাফ সাঈদ খান, আবু সাঈদ মো. সুজাউদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেক রেজা, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, মুনতাসির রহমান, গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর, তামিম আহমেদ এবং তাহসিন রিয়াজ।
দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা মিতু, মোল্লা রহমতউল্লাহ, এসএম শাহরিয়ার, জোবায়ের আরিফ, উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাসের খান, সাকিব মাহাদী, মেজর (অবঃ) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, হানিফ খান সজীব।
যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম, যুব উইং ডা. আবদুল আহাদ, দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আবদুস জাহির, মাজহারুল ইসলাম ফকির, গোলাম মুর্তুজা সেলিম, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র দাস, ডিম্পালী ডেভিড রাজু, শাহ মঈনুদ্দিন, সাদ্দাম হোসেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির আংশিক কমিটি ঘোষণার কথা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করব।
ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা৷
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা ও ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দলে দলে জমায়েত হচ্ছেন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে৷
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সড়কে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। মঞ্চের সামনের সারিতে এক পাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বসার আসন রাখা হয়েছে। আরেক পাশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্যদের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চ থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষের মিছিলগুলোকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। মঞ্চের সামনে রাজনৈতিক নেতাদের সারিতে আসন গ্রহণ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত হয়েছেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, খেলাফত মজলিসের নেতা আহমেদ আবদুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এ কে এম আজহারুল ইসলাম, এবি পার্টির নেতা দিদারুল আলম ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল।
অনুষ্ঠানের সামনের সারিতে কূটনীতিকদের জন্যও আসন রাখা হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর কামরান দাঙ্গাল ও ঢাকায় ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত।
এর আগে বিকাল ৪টা ২০মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর একে একে পাঠ করা হয় গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল। পরে পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত। সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে অংশ নেন। এছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে।
বক্তৃতা পর্বের শুরুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, এই তরুণদের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে মানুষের যে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় নাই, সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, নাগরিক পার্টি মনে করে, শহীদ ও আহতদের স্পিরিট ধারণ করে কীভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমরা এক থাকব।
আখতার হোসেন বলেন, সারা দেশের মানুষের কাছে আহ্বান থাকবে, আজকের তরুণরা যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে, আপনারা সবাই দোয়া করবেন। যেন, সৃষ্টিকর্তা তরুণদের স্বপ্নকে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে পারে। বাংলাদেশে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তরুণরা যাতে এই খুনী, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচার করতে সক্ষম হয়। ৫৪ বছর পরে আমরা যে সুযোগ পেয়েছি। একটি নতুন সংবিধানের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। তরুণরা স্বপ্ন দেখে আগামীর বাংলাদেশ নতুন সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানান আখতার।
এরপর মঞ্চে ডাকা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের। একে একে মঞ্চে ওঠে আসেন নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, সামান্তা শারমিন, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ অনেকে।