ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি)-এর কার্যক্রম এবং দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

এ সময় ড. খলিলুর রহমান সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য অজিত দোভালকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানান। 

সিএসসি’র সপ্তম এনএসএ-স্তরের সম্মেলনে অংশ নিতে ড. খলিলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে। এ সফরকে কেন্দ্র করেই অজিত দোভালের সঙ্গে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান দিল্লিতে পৌঁছান। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাকে অভ্যর্থনা জানান।

সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলন মধ্যাহ্নভোজের পর শেষ হবে। একই দিন বিকেলেই খালিলুর রহমান ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এমন এক সময়ে দিল্লিতে গেলেন, যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা তা বিবৃতিতে জানানো হয়নি।

কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট। গত বছর মরিশাস আয়োজিত অষ্টম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশকে পঞ্চম সদস্য হিসেবে স্বাগত জানায়। সিএসসিতে রয়েছে- ভারত, শ্রীলঙ্কা, মরিশাস ও মালদ্বীপ। সেশেলস পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নেয়।

আর সেশেলস পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্ত আছে। গত বছর এই কনক্লেভের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে। তাতে অংশ নেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, মালদ্বীপের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) ইব্রাহিম লতিফ, শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মরিশাসের হাই কমিশনার হেইম্যানডোয়াল ডিলাম এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাগালা রত্নায়েক।

গত বছর সিএসসি সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় একটি সমঝোতা স্মারকে সই করা হয়। সিএসসি-এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সাধারণ উদ্বেগের অন্তর্ভুক্ত আন্তঃসীমান্তবর্তী হুমকি ও প্রতিরোধগুলোকে মোকাবিলা করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উন্নীত করা। এর অধীনে পাঁচটি সহযোগিতার স্তম্ভ আছে- সামুদ্রিক নিরাপত্তা; সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলা; পাচার এবং আন্তঃসীমান্ত সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলা; সাইবার নিরাপত্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রযুক্তির সুরক্ষা; এবং মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলা।

২০২০ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতার পরিধি বাড়াতে সিএসসি গঠিত হয়। ২০২২ সালে এতে যোগ দেয় মরিশাস।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর এটি অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার ভারতের দ্বিতীয় সফর। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নিতে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারত সফরে যান।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *