নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়নি এনসিপি

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্টসহ আবেদন করেছিল। তারপরও প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি দলটি। নিবন্ধন পেতে নতুন করে আরও কিছু নথিপত্র জমা দিতে হবে তাঁদের।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে অন্য দলগুলোকেও চিঠি দেওয়া হবে। ১৫ দিন সময়ের মধ্যে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, তা পূরণ করতে হবে।

এর আগে জুনের শেষের দিকে নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন, সেগুলো ট্রাকে করে নির্বাচন ভবনে জমা দিয়েছিল এনসিপি।

সেদিন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যে শর্ত পূরণ করতে হয়, তার জন্য যত কাগজপত্র প্রয়োজন, তা ট্রাকে করে এনে ইসিতে জমা দিয়েছি। আমাদের প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে আবেদনের মূল কাগজপত্র জমা দিয়েছে।

ইসির নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করা ১৪৪টি দলের কোনটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এ অবস্থায় সবগুলো দলকেই ১৫ দিন সময় দিয়ে ঘাটতি পূরণের চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

মঙ্গলবার ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ এ তথ্য জানান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে অন্যান্য দলগুলোকেও চিঠি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ১৫ দিন সময়ের মধ্যে যেসব ত্রুটি আছে তা পূরণ করতে হবে।

গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে আবেদন জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। পরে মেয়াদ ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওই সময় পর্যন্ত ১৪৪টি দল আবেদন করে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, দলগুলোর মধ্যে কোনটিই উত্তীর্ণ হতে পারেনি প্রাথমিক বাছাইয়ে। তাই প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আর এনসিপিসহ ৮২টি দলকে দ্বিতীয় ধাপে চিঠি দেওয়া হবে।

নিবন্ধন পাওয়ার নিয়ম

আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা ও উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোন দলের কেউ আগে সংসদ সদস্য হয়ে থাকলে বা নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়াটাও নিবন্ধনের যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়ম-কানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে নিয়ম-কানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রথমে প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর সেই দলগুলোর দেয়া তথ্য সরেজমিন তদন্ত শেষে বাছাই সম্পন্ন করে।  দাবি আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তিও দেয় কমিশন। সেখানে কোন আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। আর কোন আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ দেয় ইসি। নিবন্ধন ছাড়া কোন দল নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দিতে পারে না।

বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি ইসির নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে জামায়াত।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো গত ২২ জুন ট্রাকে করে নিয়ে নির্বাচন ভবনে জমা দিয়েছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নিবন্ধনের জন্য দলটি ৪৩ হাজার ৩১৬ পৃষ্ঠার নথি জমা দিয়েছিল। এরপরও ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করা দলটি। ফলে এনসিপিসহ ১৪৪টি দল যারা প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের ঘাটতি পূরণে ১৫ দিন সময় দিয়ে চিঠি দিচ্ছে ইসি।

নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছিলেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

সেদিন নির্বাচন ভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, তার জন্য যত কাগজপত্র প্রয়োজন তা ট্রাকে করে নিয়ে এসে ইসিতে জমা দিয়েছি। আমাদের প্রতিনিধিদল ভেতরে গিয়ে আবেদনের মূল কাগজপত্র জমা দিয়েছে।

দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, নিবন্ধনের জন্য আমরা ১০০টি উপজেলা, ২৫টি জেলা কমিটির শর্ত পূরণ করেছি। দিনরাত পরিশ্রম করে সকল শর্ত পূরণ করেছি। আশা করি অতিদ্রুত নিবন্ধন পাবো এবং আগামী সরকার গঠন করতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *