■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
অন্তর্বর্তী সরকার কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। সোমবার (২৮ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সরকার শুধু ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের উপদেষ্টামন্ডলীর কেউ কেউ কথা বলেছেন। আমাদের আগের একটা অবস্থান আছে যেটা পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন। সেটা হলো-এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এ বিষয়ে। আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেটা পরে জানানো হবে।
এদিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথমবারের মতো গণভবন পরিদর্শন করেন। পরে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টা গণভবন জাদুঘরে ‘আয়নাঘর’ -এর একটি প্রতিরূপ নির্মাণ করা উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম আজাদ বলেন, গণভবনকে জাদুঘর করার পাশাপাশি ‘আয়নাঘর’ -এর একটি রেপ্লিকা এখানে করা হবে।
এ সময় শেখ হাসিনার অডিও রেকর্ড ফাঁস প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অডিও রেকর্ড না শুনে বলতে পারব না। ডিপ ফেকের মাধ্যমে অনেক সময় কণ্ঠ নকল করা যায়।
রাষ্ট্রপতি অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান কথা বলেছেন। রাষ্ট্রপতি ইস্যু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে।
এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। অন্য ৯টি রাজনৈতিক দল হলো– জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন। তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিট আবেদনে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। তিনটি নির্বাচনের গেজেট নোটিফিকেশন বাতিল চাওয়া হয়েছে রিটে। এই তিনটি নির্বাচনে যারা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তাদের সব সুযোগ-সুবিধা ফেরত নিতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ১১ দল যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। যারা এমপি হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কেন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।