খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত মেলেনি

■ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ■

খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত মেলেনি। গাইনোকোলজিস্টসহ তিন চিকিৎসকের করা মেডিকেল রির্পোটের ১০টি সূচকের সবকটি স্বাভাবিক এসেছে। এতে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি।

ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার তিন চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. জয়া চাকমা।  তিনি বলেন, আমরা মেডিকেলে রির্পোট জমা দিয়েছি। সব পরীক্ষানিরীক্ষা করেছি। কিন্তু আসলে ধর্ষণের কোন আলামত পাইনি। 

ডা. জয়া চাকমা নিশ্চিত করেছেন, তাদের টিমে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোশারফ হোসেন ও নাহিদা আক্তার ছিলেন।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে আলামত পরীক্ষার ১০টি সূচকের সবকটিতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে ।

প্রতিবেদনে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে সেই মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয় বলে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায়। এর চার দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

এদিন রাতে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, “প্রতিবেদন আজকে (মঙ্গলবার) পেয়েছি। ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।”

ধর্ষণের অভিযোগ থেকে খাগড়াছড়িতে ছড়ানো সহিংসতাকে পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, “এটা ইস্যু করে পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন করেছে। যারা জড়িত, তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব। ২৪ তারিখ থেকে জেলায় মিছিল মিটিং করা হয়েছে। অবরোধ দেওয়া হয়েছে। জনজীবন স্থবির হয়ে গেছে। পূজার উৎসবের আমেজ নষ্ট হল অবরোধের কারণে। পর্যটক আসতে পারেনি।”

সহিংসতায় প্রাণহানির কথা তুলে ধরে আরেফিন জুয়েল বলেন, “তিনটা জীবন ঝরে গেছে, যা খুবই দুঃখজনক। তাদের পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।”

মারমা স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সদর থানায় মামলা হয়। পরের দিন ভোরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় শয়ন শীলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় সহিংসতার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য দেন জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের খাগড়াছড়িতে অজ্ঞাত তিন আসামির বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। পরে এই ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক তরুণকে আটক করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ, অবরোধে সহিংসতা গুলিতে মারা যায় ৩ জন। খাগড়াছড়িতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *