ঈদের ছুটিতে দুই দিনে ঢাকা ছেড়েছেন ৪১ লাখ সিমধারী

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■

পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে গত শুক্র ও শনিবার (২৮ ও ২৯ মার্চ) রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন প্রায় ৪১ লাখ মোবাইল সিম ব্যবহারকারী।

রোববার (৩০ মার্চ) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) ঢাকা ছেড়েছেন ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩৭ সিমধারী। আর শনিবার (২৯ মার্চ) ঢাকা ছাড়েন ২১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪টি সিমধারী ব্যক্তিরা। দুই দিন মিলিয়ে মোট ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৬২১ মোবাইল সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছাড়েন।

শুক্রবার ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫০২ গ্রামীণফোনের সিম ব্যবহারকারী। এ ছাড়া রবির ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭৬টি, বাংলালিংকের ৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৯৬টি, টেলিটকের ৯৭ হাজার ৬৩টি সিম ব্যবহারকারী এদিন ঢাকা ছেড়েছেন।

২৮ মার্চ রাত ১২টার পর থেকে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বাইরে গেছেন ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৩৭টি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী। একই সময়ে ঢাকায় প্রবেশ করেছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৩২টি সিম ব্যবহারকারী।

গতকাল শনিবার ঢাকা ছেড়েছেন ২১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪টি সিম ব্যবহারকারী। একই সময়ে ঢাকায় প্রবেশ করেছেন ৫ লাখ ৮৮ হাজার ৪টি সিম ব্যবহারকারী।

গত বছর ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয় ১১ এপ্রিল। এর মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ওই বছর চার দিনে (৬-৯ এপ্রিল) রাজধানী ছাড়েন ৫৭ লাখের মতো মুঠোফোন সিমধারী। মুঠোফোন অপারেটরদের সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছিল।

সিমধারী বলতে একেকজন মানুষকে বোঝানো হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রবীণ নারী-পুরুষ ও শিশুরা থাকতে পারে, যারা মুঠোফোন ব্যবহার করে না। ফলে প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন, সেই হিসাব পাওয়া কঠিন।

২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরের ছুটিতে (১৮-২২ এপ্রিল) এক কোটির বেশি সিমধারী ঢাকা ছেড়েছিলেন। সেই সময় ঢাকায় প্রবেশ করেছেন ২৮ লাখের মতো সিমধারী। তখন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে ওই তথ্য জানিয়েছিলেন।

পরিবহনবিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান ২০২৩ সালে একটি সমীক্ষা করেন যেখানে ঈদের আগের চার দিনে ঢাকা ছাড়েন ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ও শফিকুল আলমের দেওয়া পরিসংখ্যানে বিপুল পরিমাণ মানুষের ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার প্রমাণ মিললেও এটি ঈদের জন্য বাড়িফেরা মানুষের ‘প্রকৃত সংখ্যা’ নয়।

মোবাইল ফোনবিহীন শিশুরা এই হিসাবের বাইরে থাকছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, শূন্য থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত বয়সীরাই মোট নাগরিকের ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ।

তাছাড়া একাধিক সিম ব্যবহারকারী থাকায় প্রকৃত হিসাব পাওয়া কঠিন। আর এটা কেবল দুদিনের হিসাব। তার আগের কয়েক দিনে যারা ঢাকা ছেড়েছেন ঈদ উপলক্ষে, তাদের হিসাবও এখানে আসেনি।

ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের হিসাবে, ঢাকার জনসংখ্যা এখন সোয়া দুই কোটির মত। এর মধ্যে এক কোটির বেশি মানুষ ঈদে অন্য কোনো জেলায় যান বলে ধারণা করা হয়।

৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর ধরে আগেই ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। এর আগে ২৯ ও ৩০ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল এই চার দিন ছুটি দেওয়া হয়েছিল নির্বাহী আদেশে।

ঈদের ছুটি শুরুর আগে ২৮ মার্চ পড়েছে শুক্রবার। ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ছিল ৩ এপ্রিল। সেদিনও নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

তার পরের দুই দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি। সে হিসাবে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয় দিনের ছুটিতে থাকবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ছুটি শেষে অফিস খুলবে আগামী ৬ এপ্রিল।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *