■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন এবং কমিশনের প্রধানদের নাম ঘোষণা করেন।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসাবে ড. শাহদীন মালিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই কমিশনের প্রধান হিসেবে তার পরিবর্তে আলী রীয়াজের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক, আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) প্রেসিডেন্ট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপক শাহদীন মালিক পেশাগত ব্যস্ততার কারণে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়েছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার নতুন গঠিত ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে পাঁচটি কমিশনের প্রধান সশরীরে এবং অধ্যাপক আলী রীয়াজ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন। অধ্যাপক আলী রীয়াজ নিজের কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য শিগগিরই দেশে ফিরবেন।
দায়িত্ব পাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে আলী রীয়াজ দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে লিখেছেন, পনেরো বছর ধরে যারা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, আত্মদান করেছেন, বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, অংশগ্রহণ করেছেন তাদের আত্মদানের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা; তাদের কাছে আমি ঋণী।
তিনি লিখেছেন, এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্যে আমার এবং কমিশনের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন দেশের সর্বস্তরের মানুষের, গণমাধ্যমের, রাজনৈতিক দলসমূহের, নাগরিক সমাজের সহযোগিতা, তাদের এই সহযোগিতাই হবে নির্ণায়ক।
অধ্যাপক আলী রীয়াজের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল-
“সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আমাকে দায়িত্ব প্রদানের জন্যে অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুসকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। পনেরো বছর ধরে যারা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, আত্মদান করেছেন, বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, অংশগ্রহণ করেছেন তাদের আত্মদানের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা; তাদের কাছে আমি ঋণী।
এই উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন তাদের প্রতিটি বার্তা আমি পাঠ করেছি। ব্যক্তিগতভাবে তাদের প্রত্যেককে উত্তর দিতে না পারলেও তাদের বার্তাগুলো আমি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে গ্রহণ করেছি। এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্যে আমার এবং কমিশনের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন দেশের সর্বস্তরের মানুষের, গণমাধ্যমের, রাজনৈতিক দলসমূহের, নাগরিক সমাজের সহযোগিতা, তাদের এই সহযোগিতাই হবে নির্ণায়ক। অতীতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামে অংশগ্রহণের সূত্রে গণমাধ্যমসহ সকলের যে সহযোগিতা আমি লাভ করেছি আশা করি তা আপনারা অব্যাহত রাখবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গণমানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে যা বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যা প্রতিফলিত হয়েছে তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ।
সকলের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কথা বলতে পারলে আমি আনন্দিত হতাম, কিন্তু পেশাগত এবং ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করি শিগগিরই আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।”