■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে উত্তাল হয়েছে রাজপথ। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না এলে আবারও সারা ঢাকা শহরে ব্লকেড এবং ঢাকা মার্চ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এ দাবিতে কর্মসূচি পালন করছে ৪৩টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে ও শুক্রবার (৯ মে) বিকাল থেকে শাহবাগ মোড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
এখন পর্যন্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাম মঞ্চ, জুলাই মঞ্চ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই রেভুলোশনারি জার্নালিস্ট এলায়েন্স, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, রক্তিম জুলাই।
সোচ্চার ঢাবি, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, একতার বাংলাদেশ, ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম চাই, এইচআর এসএস, জুলাই ব্রিগেড, স্টুডেন্ট রাইটস ওয়াচ, আজাদ ফিলিস্তিন, জুলাই বিপ্লব পরিষদ, স্টুডেন্ট রাইটস এসোসিয়েশন, আমাদের মোহাম্মদপুর, জাস্টিস ফর অল, রেড এলায়েন্স, ছাত্র নাগরিক ঐক্য, ইউথ ফর পিস, ঢাকা মুভমেন্ট, ধানমন্ডি এলায়েন্স, কমিউনিটি এলায়েন্স, জুলাইয়ের প্রেরণা, মুক্তির আন্দোলন, ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন, জনতার ঐক্য, আগামীর বাংলাদেশ, পিপলস একটিভিস্ট কোয়ালিশন প্যাক।
তবে এ আন্দোলনে বিএনপি এখনো যোগ দেয়নি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কি না, তা বিএনপির বক্তব্যের বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বলছে, তারা তাদের বক্তব্যে বলেছে। কাজেই বিএনপি হিসেবে তো আমরা এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নই। আমাদের মহাসচিব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ইতিমধ্যে বলেছেন যে জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয় এটা। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে, আর কারা করবে না। এটা হচ্ছে আমাদের (বিএনপির) বক্তব্য।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মোড়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে অবস্থান করছেন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা এবং নিষেধাজ্ঞা সংবলিত পোস্টার। স্লোগানে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘এই মুহূর্তে ব্যান চাই, আওয়ামী লীগের ব্যান চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’।
শাহবাগ চত্বরে বিজ্ঞাপন বোর্ডের নিচে অবস্থান নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবির, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদেরও সেখানে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের নেতা মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী ও তাঁর অনুসারীরাও।
রাত ৯টার দিকে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। শাহবাগেই আওয়ামী লীগের কবর খুঁড়ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টেরিম সরকার দেরি করলে শুধু শাহবাগ নয়, সারা বাংলাদেশে অবরোধ চলবে।’ সেই সঙ্গে তিনি জুলাইয়ে ‘গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের দাবি জানান।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সরকার যদি দ্রুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে আন্দোলনের পরিধি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে অবরোধের ঘোষণা আসার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে জড়ো হতে শুরু করলে আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। শাহবাগ মোড় থেকে কাঁটাবন, মৎস্য ভবন ও কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
রাত ১০টার দিকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে এক বেসরবকারি চাকুরিজীবী বলেন, শাহবাগ থেকে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরবো সে সুযোগ নেই। পুরো শাহবাগ সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। প্রায় এক ঘন্টা ধরে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি।

দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে আবারও ‘মার্চ টু ঢাকা’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে আবারও ‘মার্চ টু ঢাকা’র মতো কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (৯ মে) চলমান ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির মধ্যেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা ফেসবুক পোস্টে বলেন, শাহবাগের অবস্থান চলমান থাকবে। দলমত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগ ও দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে জুলাইয়ের সকল শক্তি এক থাকবে এটাই প্রত্যাশা। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্লকেড চালু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে সমগ্র বাংলাদেশ আবারও ঢাকা শহরে মার্চ করবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী, জুলাই বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী, ইসলাম বিরোধী, নারী বিরোধী, মানবতা বিরোধী ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী মুজিববাদী সংগঠন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণে বাংলাদেশপন্থি সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হই।
২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির মধ্য দিয়েই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত পতন হয়েছিল।
৮ মে রাত থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন। রাত পেরিয়ে শুক্রবার দুপুরেও এনসিপির নেতাকর্মীরা যমুনার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে শুক্রবার বিকেলে থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজধানীর শাহবাগ মোড়। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলছে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি।
স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে উঠেছে তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়। আজ শুক্রবারও বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা।
বরিশালে দেড় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার রাত আটটার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ‘বরিশালের সর্বস্তরের ছাত্র আন্দোলন ও জনতা’র ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা সংবাদ সম্মেলন করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আপাতত অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এর আগে বিকেল ৫টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংহতি সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এতে ওই লেনে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। এ ছাড়া শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা নগরের পুবালি চত্বরে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। এতে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এবি পার্টির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরের পাশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ। আজ দুপুরে নগরের তালাইমারীর বিজয় ২৪ চত্বরে শিক্ষার্থীরা আবারও বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।
সিলেটে আজ বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতভর একই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
রংপুরে আজ বেলা ২টার পর নগরের জিলা স্কুল থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, গণ অধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও যুবদলের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় কুড়িগ্রাম শাপলা চত্বরে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রংপুর জিলা স্কুলের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভছবি: প্রথম আলো
নড়াইলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার মালিবাগ এলাকায় ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে কিছু সময় ধরে মহাসড়ক আটকে এ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে যানজট সৃষ্টি হলে তাঁরা সড়কটি ছেড়ে দেন।
লক্ষ্মীপুরে শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। বিকেলে তাঁরা শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঝুমুর চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সেখানে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
নোয়াখালীতে ‘জুলাই ঐক্য’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে জেলা শহর মাইজদীর জামে মসজিদ মোড়ের মাইজদী-সোনাপুর সড়কে এই কর্মসূচিতে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা অংশ নেন।
সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এনসিপি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা। সাভারের পাকিজা এলাকায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ শুরু করেন। রাত ১০ টা ৫০ মিনিটের দিকে মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে হ্যান্ডমাইকে প্রথমে ২০ মিনিটের জন্য অবরোধ কর্মসূচি বিরতি ঘোষণা করা হয়। পরে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে আবারও ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ পালন করার ঘোষণা দিয়ে রাত ১১টা ২০মিনিটের দিকে চলে যান আন্দোলনকারীরা।
একই দাবিতে শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা টঙ্গী কলেজ গেট এলাকার শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের সামনে এই অবরোধ করেন।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায়ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। শুক্রবার রাত ৯ টা থেকে এই অবরোধের কারণে ঢাকামুখী অংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে রাত সোয়া ১১টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন আন্দোলনকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও (জাবি) বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।