■ কুমিল্লা প্রতিনিধি ■
শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বীথিকে কুমিল্লা থেকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার বিকেলে কুমিল্লা নগরের জেলখানা মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়। রাতেই তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খাদিজা ইয়াসমিন বীথির বিরুদ্ধে অপরাধ চক্রের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন এবং পলাতক সহযোগীদের সহায়তার মতো গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল রাতে র্যাব-১১-এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বীথি কুমিল্লায় অবস্থান করছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে নগরের জেলখানা সড়কে আমরা অভিযান চালাই। এ সময় তাঁকে আটক করা হয়। আটকের পর রাতেই তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। ৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল কুমিল্লা কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য খাদিজা ইয়াসমিন কুমিল্লা আসেন। অপরাধ চক্রের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ও পলাতক সহযোগীদের সহায়তার বিষয়ে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। এর বাইরেও অন্য কোনো কারণ আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে কুষ্টিয়া থেকে যৌথ বাহিনী শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেফতার করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী থেকে সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধজগতের আলোচিত নাম ছিল সুব্রত বাইন। আধিপত্য বিস্তার করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে তার নাম আসা ছিল তখনকার নিয়মিত ঘটনা। এসব কাজ করতে গিয়ে অসংখ্য খুন-জখমের ঘটনাও ঘটেছে।
মূলত নব্বইয়ের দশকে মগবাজারের বিশাল সেন্টার ঘিরেই উত্থান হয় সুব্রত বাইনের। তিনি এই বিপণিবিতানের কাছে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের চাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিলেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে অপরাধজগতের সঙ্গে জড়িয়ে যান। পরে বিশাল সেন্টারই হয়ে ওঠে তাঁর কর্মকাণ্ড পরিচালনার কেন্দ্র।
২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে নামের তালিকা তৎকালীন বিএনপি সরকার ঘোষণা করেছিল, তাঁদের অন্যতম ছিলেন সুব্রত বাইন। তাঁর নামে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। সেখানে তাঁর বয়স দেখানো হয়েছে ৫৫ বছর। তাঁকে ধরিয়ে দিতে তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
