■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
নেপালের নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সবিতা ভাণ্ডারি বরাল। নেপালে প্রথমবারের মতো কোনও নারী এই পদে আসীন হলেন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওডেল তাকে এই পদে নিয়োগ দেন।
প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি সবিতার নিয়োগের সুপারিশ করেন। আর প্রেসিডেন্ট তা অনুমোদন করেন।
এর আগে সকালে প্রেসিডেন্ট পাওডেল অ্যাটর্নি জেনারেল রমেশ বাদালের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
সবিতা এর আগে তথ্য কমিশনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিশিষ্ট আইনবিদ কৃষ্ণ প্রসাদ ভাণ্ডারির কন্যা।
প্রধানমন্ত্রী সুশিলা কারকি রোববার সকালে সবিতা ভাণ্ডারির নাম প্রস্তাব করেন। ভাণ্ডারির সম্মতির পরপরই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
নেপালের অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ১৫’র মধ্যে
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি তাঁর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেছেন। গতকাল রোববার তিনি তিনজন নতুন মন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করেন। আজ সোমবার এই মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
কারকি সাবেক অর্থসচিব রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী, খ্যাতিমান আইনজীবী ওমপ্রকাশ আর্যালকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি ও সেচমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ঘিসিংকে আরও দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে—সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়।
কারকি এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেন, সোমবার নতুন মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলকে জানিয়েছেন, এই কঠিন সময়ে তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ১৫-এর মধ্যে সীমিত রাখবেন। ধীরে ধীরে অন্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে তিনি দ্রুত পরামর্শও শুরু করেছেন।
কারকি ওই ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা, ব্যবসায়ী মহলসহ বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করা এবং সাধারণ মানুষকে স্বস্তির বার্তা দিতে অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগের জন্য প্রবল চাপ ছিল। সে কারণেই তিনি এমন কিছু সেরা মানুষকে বেছে নিয়েছেন, যাদের পেশাদার সততা প্রমাণিত।’
উপদেষ্টা জানান, আইনজীবী আর্যাল শুরুতে সরকারের বাইরে থেকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে পরে তিনি যোগ দিতে রাজি হন। গত সপ্তাহের বিক্ষোভের পর সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউদেল, প্রধানমন্ত্রী কার্কি, জেন–জি প্রতিনিধিরা এবং প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছিল, আর্যাল সেখানেও অংশ নিয়েছিলেন।
জেন–জির পতাকাতলে আয়োজিত দুই দিনের দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে ইতিমধ্যে ৭২ জনের বেশি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। গত সোমবার ও মঙ্গলবার সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়, অগ্নিসংযোগও করা হয়।
এর আগে খনাল উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক সংস্কার সুপারিশ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কে পি শর্মা অলি সরকারের কাছে ৪৪৭ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। ঘিসিং দেশ থেকে ব্যাপকভাবে লোডশেডিং কমিয়ে আনার জন্য প্রশংসিত, তাঁকে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অলি সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেয়। জনরোষের মধ্যেই তখন ঘিসিংয়ের স্থলে হিতেন্দ্র দেব শাক্যাকে নিয়োগ দিয়েছিল অলি সরকার।
শনিবার সন্ধ্যায় সুশীলা কারকি মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে পরামর্শ শুরু করেন। রোববার সন্ধ্যায় তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন যে, অ্যাডভোকেট আর্যাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন, বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন। এর আগেই কারকি রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী ও কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।