■ ক্রীড়া প্রতিবেদন ■
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
তার ছেলের স্ত্রী ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর হাজরা ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর বলেন, ‘পিন্টু ভাই গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হলেন। এত দ্রুত আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন ভাবতে পারিনি। পিন্টু ভাই আমার খেলা নয় জীবনেরও অধিনায়ক।’
বার্ধক্য ও নানা রোগে ভুগছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। গতকাল বাসায় আকস্মিকভাবে পড়ে যাওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। জাকারিয়া পিন্টুর বড় ছেলে তানভীরের স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ কিডনির সমস্যার জন্য অন্য হাসপাতালে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর আগেই বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’
রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত জাকারিয়া পিন্টুকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় সেখানে তাঁকে সিসিইউতে রাখা হয়। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শীর্ষ ফুটবলাররা গঠন করেছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। নিজেদের পায়ের ফুটবলে দেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে বিশ্বজনমত তৈরি করেছিল এই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।
দলটি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এর ১২টিতেই জিতেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ওই ম্যাচের টিকিট বিক্রির অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তহবিলে।
পরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ফুটবল দলকেও নেতৃত্ব দেন জাকারিয়া পিন্টু। তাঁর অধিনায়কত্বে ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ।
অধিনায়কত্বের বাইরে একজন অসাধারণ ডিফেন্ডার হিসেবেও বাংলাদেশের ফুটবলে বিশেষ স্থান আছে জাকারিয়া পিন্টুর।
মোহামেডানের সাবেক এই তারকা সংগঠক হিসেবেও মোহামেডানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।
জাকারিয়া পিন্টু ষাট-সত্তর দশকে মোহামেডানের জার্সিতে খেলেছেন। মোহামেডানের স্বর্ণ সময়ের অধিনায়ক ছিলেন। নানা বৈষম্যের মধ্যেও পাকিস্তান ফুটবল দলে খেলেছেন পিন্টু। স্বাধীনতা উত্তর প্রথম বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। খেলা ছাড়ার পর মোহামেডান ক্লাব ও ফেডারেশনের নানা দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেও কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন কিংবদন্তী এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব।