■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
রাজধানীর কমলাপুরের টিটিপাড়ায় নির্মিত ৬ লেনের আন্ডারপাস চালু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে আন্ডারপাসটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আন্ডারপাস চালুর ফলে এলাকার দীর্ঘদিনের যানজট ও রেলক্রসিংয়ে ভোগান্তির অবসান ঘটেছে।
সকালে আন্ডারপাসটি পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং সড়ক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন। পরিদর্শন শেষে তাঁরা আন্ডারপাসটি চালুর নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, শনিবার সকাল ১০টা থেকে আন্ডারপাসটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীরা পরিদর্শনের পর জানান, এর জন্য আলাদা কোনো আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন নেই। ফলে আন্ডারপাসটি যান চলাচলের জন্য চালু করা হয়েছে।
রেলপথের নিচ দিয়ে নির্মিত এই আন্ডারপাস চালু হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এতে মুগদা, কমলাপুর, মতিঝিল ও সায়েদাবাদের আশপাশের এলাকায় যানজট অনেকটা কমবে এবং যোগাযোগ আরও সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্ডারপাসটির নিচে ৬ লেনের রাস্তা রয়েছে—এর মধ্যে ৪ লেন যান্ত্রিক যানবাহনের জন্য, আর দুই পাশে রিকশা ও সাইকেলের আলাদা লেনসহ ফুটপাত রাখা হয়েছে। পাঁচ মিটার উচ্চতার গাড়ি সহজেই চলাচল করতে পারবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্ডারপাসটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে সম্পূর্ণ হয়। এই আন্ডারপাস চালুর ফলে রেল চলাচলের সময় ব্যস্ত টিটিপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘ যানজটের সমস্যা দূর হবে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, ‘চারটি লেন মোটরচালিত যানবাহনের জন্য (বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ)। দুটি আলাদা লেন রিকশা, ভ্যান ও সাইকেলের মতো নন-মোটরচালিত বাহনের জন্য। পথচারীদের হাঁটার জন্য রয়েছে ফুটপাথ।’
তিনি বলেন, ‘পথচারী, সাইকেল ও রিকশার জন্য আলাদা লেনের সুবিধাসম্পন্ন এটি ঢাকা শহরের প্রথম রেলওয়ে আন্ডারপাস। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই আন্ডারপাসটির দৈর্ঘ্য ৩৩৮ মিটার এবং প্রস্থ ৩১ মিটার।’
সংশ্লিষ্টদের মতে, আন্ডারপাসটি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। তবে কমলাপুরে মেট্রোরেল স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্ডারপাসের শতভাগ সুফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে।
প্রকল্পের প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের জন্য আলাদা একটি ‘রেইনওয়াটার পাম্প ওয়েল’ স্থাপন করা হয়েছে। আন্ডারপাসের সব পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ওয়েলে যাবে, যেখানে ৭৫ কিলোওয়াটের চারটি পাম্প রয়েছে। পানির স্তর অনুযায়ী পাম্পগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে পানি পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনের ক্যানেলে পাঠিয়ে দেবে।
