■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অভিশংসিত হয়েছেন। দ্বিতীয় দফার অভিশংসন প্রস্তাবে ভোট দিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ২০৪ জন আইনপ্রণেতা।
শনিবার স্থানীয় বিকেলে পার্লামেন্টে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে ৩০০ আইনপ্রণেতার মধ্যে ২০৪ জন অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন এবং ৮৫ জন বিপক্ষে। তিনজন ভোটদানে বিরত থাকেন এবং আটটি ভোট বাতিল করা হয়। অভিশংসনের কারণে ইউন তার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত এখন এই ভোট নিয়ে পর্যালোচনা করবে।
এ অবস্থায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন ডাক-সু দেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে সম্পূর্ণ রায় জানাতে আদালতের সামনে রয়েছে ১৮০ দিন। এই সময়ের ভেতরেই আদালত ইউনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
এ বিষয়ে এখন সাংবিধানিক আদালতে শুনানি হবে। যদি আদালতের নয় সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের ছয় জন অভিসংশন প্রস্তাবের পক্ষে সিদ্ধান্ত জানান তবেই প্রেসিডেন্ট ইউনকে স্থায়ীভাবে পদ ছাড়তে হবে। পরে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে দক্ষিণ কোরিয়াকে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সামরিক শাসন ঘোষণা করলে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইউন। ইউনের আদেশের বিরোধিতা করে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধীদলীয় সদস্যরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেছিল। তাদের ভোট আর জনগণের বিক্ষোভের কারণে সামরিক শাসন উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট। এরপর থেকেই ইউনের পদত্যাগের জন্য দেশব্যাপী দাবি ওঠে।
গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ইউন বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে প্রথম দফা অভিশংসন উদ্যোগ থেকে রক্ষা পান। তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বয়কট করায় রক্ষা পান ইউন।
তবে এত কিছুর পরেও গত ১২ ডিসেম্বর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইউন বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। ইউন আরও বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে তদন্ত বা অভিশংসন যাই আনা হোক আমি দৃঢ় থাকব। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। তবে শেষ রক্ষা আর হলো না তার। আর ইউন পদত্যাগ করলে সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন-হাই এর অভিশংসন এবং পদত্যাগের ঘটনায় পিপিপির পতন এবং লিবারেলদের বিজয় দেখা যায়।