■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। চলতি বছর ১৯ লাখ ২৮ হাজার শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এর মধ্যে ছাত্র সাত লাখ এক হাজার ৫৩৮ জন, ছাত্রী সাত লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা দুই হাজার ২৯১টি এবং প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৪টি।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সর্বমোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন এবং ছাত্রী এক লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ জন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৭২৫টি এবং প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নয় হাজার ৬৩টি। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সর্বমোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র এক লাখ আট হাজার ৩৮৫ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৯২৮ জন।
গেল শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এক থেকে একাধিক বিষয়ে ফেল করেছিল তারা এবার সেসব বিষয়ে পরীক্ষা দেবে। এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার দুই লাখ ৬৭ হাজার ৯৫ জন। এ ছাড়া মানোন্নয়নের জন্য নতুন করে পরীক্ষায় বসবে এক হাজার ৮২৩ জন। ১১টি শিক্ষাবোর্ডে নিয়মিত, অনিয়মিত, মানোন্নয়নসহ সবমিলিয়ে এবার পরীক্ষায় বসছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৩১ জন শিক্ষার্থী।
এবার এক বিষয়ের পরীক্ষা দেবে এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ২৫ হাজার ৯০১ জন। দুই বিষয়ে পরীক্ষা দেবে ৩৭ হাজার ৯ জন। তিন বিষয়ে পরীক্ষা দেবে ১০ হাজার ২১৪ জন এবং চার বিষয়ে পরীক্ষা দেবে দুই হাজার ৫৭৯ জন।
সুষ্ঠু, সুন্দর ও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গকিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। প্রশ্নপত্র ফাঁস, গুজব, নকল বা অসদুপায় অবলম্বনের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেছে কমিটি।
সম্প্রতি এসএসসি ও সমমানের গণিত পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। এ পরীক্ষা ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নতুন সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী ১০ এপ্রিল শুরু হয়ে এ পরীক্ষা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। এবারও বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হবে বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের ও সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র দিয়ে। নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে ১৫ থেকে ২২ মে পর্যন্ত এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে।
নির্ধারিত দিনে সকাল ১০টায় এসব পরীক্ষা শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বোর্ডের নির্দেশনা
- পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করতে হবে।
- প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
- প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।
- পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে পরীক্ষা শুরুর অন্তত তিনদিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করবে।
- শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যাবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবে।
- পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতে উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
- পরীক্ষার্থীকে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যাবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে।
- প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয়/বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
- কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা (সৃজনশীল/রচনামূলক(তত্ত্বীয়)/বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক) নিজ বিদ্যালয়ে/প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে।
- পরীক্ষার্থীরা সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
- কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি/পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
- সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যাবহারিক পরীক্ষায় উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতিপত্র ব্যবহার করতে হবে।
- ব্যবহারিক পরীক্ষা নিজ নিজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
- পরীক্ষার ফল প্রকাশের সাত দিনের মধ্যে পুর্নর্নিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
এছাড়া পরীক্ষা চলাকালে, পরীক্ষা শুরুর আগে বা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের আশেপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ থাকবে। ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।