■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
আসন্ন রমজানে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য সহনীয় রাখার লক্ষ্যে ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে বিদ্যমান সব আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম আয়কর আগামী ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পৃথক ৩টি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম তেল বিক্রয়ের ওপর স্থানীয় পর্যায়ে প্রদেয় মূল্য সংযোজন কর উল্লিখিত সময়কাল পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এসব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে প্রদেয় মূসক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তাই এসব পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক ব্যতীত অন্য কোনো শুল্ক-করাদি অবশিষ্ট রইল না।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর ও ১৯ নভেম্বর জারি করা শুল্ক-করাদি অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন দুটি সয়াবিন ও পাম তেলের ক্ষেত্রে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রযোজ্য ছিল। ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং ভোক্তাসাধারণের জন্য ভোজ্যতেলের মূল্য সহনীয় রাখতে সয়াবিন ও পাম তেলের পাশাপাশি এবার অপরিশোধিত/পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল ও ক্যানোলা তেলের আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর ও মূসক কমানো হয়েছে। সয়াবিন ও পাম তেলের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী দর বিবেচনায় নিয়ে পবিত্র রমজান মাসে পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন তিনটির মেয়াদ আগামী ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।
সানফ্লাওয়ার তেল ও ক্যানোলা তেলের কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি, আগাম কর ও অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এবং মূল্য সংযোজন কর কমানোর ফলে এসব তেলের আমদানি ব্যয় লিটারপ্রতি ৪০-৫০ টাকা কমবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক গৃহীত এসব ব্যবস্থার ফলে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়বে এবং এর ফলে বাজার মূল্য সর্বসাধারণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা যাবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে।
৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে আট টাকা বেড়েছে। এর ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৭ টাকা। খোলা পাম তেলের লিটারও ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম এখন ৮৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা।
সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে রাইস ব্র্যান অয়েল বা ধানের কুঁড়ার তেল রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে শুল্কারোপের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সংস্থাটি এ জন্য অপরিশোধিত ও পরিশোধিত—উভয় ধরনের কুঁড়ার তেল রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপের সুপারিশ করেছে।
মূলত আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও দাম সহনীয় রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে ভ্যাট ও অগ্রিম কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।