১৯ বছর পর বাবার কবরের পাশে তারেক রহমান

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■ 

১৭ বছর পর দেশে ফিরে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৯ বছর পর বাবার কবর জিয়ারতের সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জিয়ারত ও মোনাজাত শেষে বাবার কবরের পাশে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তারেক রহমান। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং তার চোখ ভিজে যায়।

এসময় প্রথমে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়।

এ সময় তারেক রহমানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় তারেক রহমানের পাশে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

এর আগে ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে তারেক রহমান এখানে শেষবার শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের কারণে আর আসা সম্ভব হয়নি।

শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেতা, ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী জনাব তারেক রহমানের বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনে দেশের মানুষ খুশি হয়েছে, জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে, জনগণ উজ্জীবিত হয়েছে।’

তারেক রহমান জিয়া উদ্যানে আসবেন-এ খবর আগে জানা থাকায় সকাল ১০টা থেকে সেখানে নেতা-কর্মীদের ভিড় জমতে থাকে। জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা করা হয়। এ দিন বেলা ২টা ৫২ মিনিটে তারেক রহমানের গাড়িবহর গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়ির সামনে থেকে জিয়া উদ্যানের পথে রওনা দেয়।

আগের দিন যে বুলেটপ্রুফ বাসে করে তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে এসেছিলেন, সেই বাসে করেই তিনি শেরেবাংলা নগরে যান। লাল-সবুজ পতাকার রঙে সাজানো বাসের সামনে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে তারেক রহমান কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। বাস ঘিরে কর্মী-সমর্থকদের প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লেগে যায় পৌনে ২ ঘণ্টা।

বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে বাস থেকে নেমে তিনি সমাধিস্থলে হেঁটে রওনা দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফেরেন তারেক রহমান। ফেরার দিন রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় দলের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এরপর অসুস্থ মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং সেখান থেকে গুলশানের বাসভবনে ফেরেন।

ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন জনসমাগমে ঢাকা মহানগরী জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

পরে বিকালে রাজধানীর ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফিট) আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনায় তিনি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে আবেগঘন কণ্ঠে তিনি তুলে ধরেন এক নিরাপদ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের চিত্র, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *