শহীদ হাদির কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■ 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করেছেন। এরপর তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার একটু আগে তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে ওসমান হাদির কবরে পৌঁছান।

তারেক রহমান প্রথমে ওসমান হাদির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর মোনাজাত করেন। পরে তারেক রহমান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরে ফুল দেন ও মোনাজাত করেন।

মোনাজাত পরিচালনা করেন শরিফ ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ অনেকে।

গত দুই দিনের মতো আজ লাল–সবুজ রঙে সাজানো বাসে যাননি তারেক রহমান। তিনি সাদা রঙের একটি গাড়িতে ওসমান হাদির কবরে যান। গাড়িটি ফুল দিয়ে সাজানো ছিল।

এ সময় রাস্তার দুই পাশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

বিএনপির মিডিয়া সেল সকালে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত না থাকায় তারেক রহমান পঙ্গু হাসপাতালে যাবেন না।

এর আগে তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে টিএসসি এলাকায় অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের নেতৃত্বে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান করেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন তারেক রহমান। তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘিরে ঢাকায় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা সমাবেশে সারা দেশ থেকে দলের মনোনীত প্রার্থীরা অংশ নেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমানের আবেদন নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, এ বিষয়ে আগামীকাল রোববার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ভোটার হতে তারেক রহমানের সঙ্গে জাইমা রহমানের আবেদন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমানের আবেদন নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, এ বিষয়ে আগামীকাল রোববার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শনিবার দুপুরে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে যান তারেক রহমান, তাঁর সঙ্গে মেয়ে জাইমাও ছিলেন।

নির্বাচন ভবনের পেছনে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের একটি কক্ষে গিয়ে ছবি তোলা, ১০ আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া, চোখের আইরিশ (চোখের মণির ছাপ) ও স্বাক্ষর করার কাজ করেন তারেক রহমান ও জাইমা রহমান।

এ সময় সেখানে উপস্থিত থাকা নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামীকাল নির্বাচন কমিশনে এটা পেশ করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে উনাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।’

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে ইসি। তবে ভোটার তালিকা আইনে বলা আছে, ইসি যেকোনো সময় ভোটার হওয়ার যোগ্য যেকোনো ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন রেখে তফসিলও ঘোষণা করেছে ইসি।

তারেক রহমান সপরিবার গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরলেও এর আগেই বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সে অনুযায়ী, পৈতৃক এলাকা বগুড়ার সদর (বগুড়া–৬) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারেক রহমান। তাঁর পক্ষে স্থানীয় নেতারা ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সংসদ নির্বাচনে নিজের প্রথম অংশগ্রহণের দেড় মাস আগে ভোটার তালিকায় নাম তোলার প্রক্রিয়া সারলেন।

তারেক রহমান ও জাইমা রহমান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার হতে আবেদন করেছেন বলে জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

স্থানীয় নির্বাচনে যে কারও প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোটার হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় যে কেউ দেশের যেকোনো আসনে প্রার্থী হতে পারেন।

তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া যেটা আছে ফর্ম ২, ওই ফর্ম ফিলাপ করে ওনারা ছবি তুলেছেন, বায়োমেট্রিকস দিয়েছেন এবং দিয়ে ওনারা আবেদন করেছেন যে ওনাদের যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’

এই আবেদন নিয়ে আগামীকাল পূর্ণাঙ্গ কমিশন বৈঠকে বসবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিবন্ধনটা চলমান প্রক্রিয়া। নিবন্ধন কমপ্লিট করেছেন তিনি। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি যেটা আগামী আপনার ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত। সে ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত লাগবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত দুইভাবে পাওয়া যায়। একটা হচ্ছে আনুষ্ঠানিক সভা করে, আরেকটা হচ্ছে নথির মাধ্যমে।’

ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেতেও নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সারেন তারেক রহমান।

এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এস এম হুমায়ুন কবীরের কাছে সকালে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, তারেক রহমানের নিবন্ধনপ্রক্রিয়াটি শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে?

জবাবে এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, তা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভবপর নয়। এটা ৫ ঘণ্টা, ৭ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা, কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি লাগে, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে একটু কম লাগে।

আরাফাত রহমানের কবর জিয়ারত

রাজধানীর বনানী কবরস্থানে আজ শনিবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে পৌঁছান তারেক রহমান। তিনি ছোট ভাই আরাফাত রহমানের কবর জিয়ারত করেন। পরে শ্বশুরের কবর জিয়ারত করেন।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকালে গুলশানের বাসা থেকে বের হন তারেক রহমান। তবে গত দুই দিনের মতো আজ লাল–সবুজ রঙে সাজানো বাসে যাননি তিনি। সাদা রঙের একটি গাড়িতে (এসইউভি) চড়ে যান তিনি, গাড়িটি ছিল ফুল দিয়ে সাজানো। এই গাড়ির পেছনে আরেকটি গাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

সকালে বেরিয়ে নেতা–কর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করেন তারেক রহমান। পরে আগারগাঁওয়ে যান তিনি। নির্বাচন ভবন থেকে তিনি বনানী কবরস্থানে গিয়ে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন।

শ্বশুরবাড়িতে প্রাণিপ্রেমী তারেক রহমান

রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজের শ্বশুরবাড়ি ‘মাহবুব ভবন’-এ গিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানের বাসভবন থেকে সড়কপথে তিনি সেখানে পৌঁছান।

ওই বাড়ির কয়েকটি বিড়ালকে আদর করছেন তারেক রহমান— এমন একটি ছবি বিএনপির মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। আর ক্যাপশনে লেখা হয়— ‘প্রাণিপ্রেমী তারেক রহমান।’ ছবিটি দেখে মন্তব্যের ঘরে প্রশংসা করছেন নেটিজেনরা।

ওই ছবিতে দেখা যায়, বিড়ালগুলো ছোট একটি ঘরের মতো, সেখানে আছে। ঘরটির সামনের দিক নেট দিয়ে আটকানো। নেটের ফাঁক দিয়ে হাত দিয়ে বিড়ালগুলোকে আদর করছেন তারেক রহমান।

এ ছাড়া তারেক রহমানের পরিবারেরও ‘জেবু’ নামের একটি পোষা বিড়াল রয়েছে। তারেকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছে বিড়ালটিও।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *