:: বান্দরবান প্রতিনিধি ::
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় রোববার সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি–চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএফ) দুজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।
জেলার রুমা উপজেলার দূর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় রোববার এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, অভিযানের সময় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে সকাল পর্যন্ত ওই এলাকায় প্রচণ্ড গোলাগুলি শব্দ শোনা গিয়েছে। পরে আজ রবিবার সকালে গুলিবিদ্ধ দুটি মরদেহ জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থলটি রুমা থানা এলাকার হলেও থানচি থানার সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা ও নিকটবর্তী হওয়ায় ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজার অপহরণ, রুমায় মসজিদে ও থানচি বাজারে হামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুটের ঘটনায় পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, র্যাব, আর্মড পুলিশসহ যৌথ বাহিনী।
জেলার রুমা-রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী। সাড়াশি অভিযানে রুমা বাকলাই পাড়া এলাকায় গতরাত এবং আজ সকালে (২৮ এপ্রিল) কেএনএফর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এ সময় গোলাগুলিতে কেএনএফর বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
২ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথমে বান্দরবানের রুমার সোনালী ব্যাংক শাখায় হানা দেন অস্ত্রধারীরা। ওই হামলায় কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের শতাধিক সদস্য অংশ নেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময় তাঁরা ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করার চেষ্টা চালান। টাকা নিতে না পেরে তাঁরা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলি লুট করেন। পরে ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দীনকে অপহরণ করে নিয়ে যান। ৪৮ ঘণ্টা পর তাঁকে রুমা বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করে র্যাব।
এদিকে রুমার হামলার ১৭ ঘণ্টা পর থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করেন অস্ত্রধারীরা। এসব ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় ৯টি মামলা হয়েছে। কুকি–চিনের সদস্যসহ এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৬৬ জনকে। এর মধ্যে ৫৩ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।