■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যজন, অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালউদ্দিন হোসেন মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় কানাডার ক্যালগেরির রকিভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক মুহাম্মদ খান ও সাস্কাটুন প্রবাসী রাজনীতিবিদ বজলুর রহমান তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
তিন সপ্তাহ ধরে কানাডার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রর আটলান্টা থেকে কানাডার ক্যালগেরির মাউন্ট রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসফিন হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকের একসময়ের ব্যস্ত এই অভিনয়শিল্পী। হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে ছেলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা তাঁর ইউরিন ইনফেকশনের খবর জানায়। পরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতিতে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখান থেকে আর ফেরা হলো না এই অভিনেতার।
মুত্যুর সময় পাশে ছিলেন অভিনেতার স্ত্রী অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেন ও ছেলে তাশফিন হোসেন।
শনিবার জোহর নামাজের পর কানাডার ক্যালগিরির আকরাম জুমা জামে মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং জানাজা শেষে রকি মাউন্টেন সংলগ্ন কক্রেন শহরের মুসলিম কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে জানিয়েছে অভিনেতার ছেলে তাশফিন হোসেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই নাট্যজন একাধারে ছিলেন অভিনেতা, নাট্যকার-নির্দেশক ও নাট্য সংগঠক। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন প্রকৌশলী।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা দেখা দিলে তাকে তড়িঘড়ি রকিভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেন চিকিৎসকরা।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন জামালউদ্দিন হোসেন। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের এই সদস্য পরে টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রেও কাজ করেন। গত ১৫ বছর ধরে অভিনয়ে একেবারে অনিয়মিত তিনি। গত ৭ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। পরে টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রেও কাজ করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বেতার টেলিভিশন শিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রাণী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’সহ কয়েকটি আলোচিত মঞ্চ নাটক পরিচালনা করেছেন জামালউদ্দিন হোসেন।
১৯৯৭ সালে তিনি তাঁর নিজের নাট্যগোষ্ঠী নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল শুরু করেন এবং এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। জামালউদ্দিন হোসেনের স্ত্রী অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেনও শারীরিকভাবে অসুস্থ।