:: কুমিল্লা প্রতিনিধি ::
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন।
শনিবার বেলা ২টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মফিজুল ইসলামের উন্দানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে সভায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুজন গুলিবিদ্ধসহ ৫০ বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ শরিফ বলেন, ‘একজনের পায়ে ও হাতে এবং আরেকজনের মাথায় ছররা গুলি লেগেছে। ওরা এখন আশঙ্কামুক্ত।’
হামলার সময় উন্দানিয়া গ্রামে বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম জানান, হামলার সময় তার উন্দানিয়া গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
আজ বেলা তিনটায় উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলামের বাড়িতে কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর। বেলা দুইটার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াতউল্লাহ ও কামরুল হাসান শাহীনের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী গৈয়ারভাঙা বাজারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
গুলিবিদ্ধসহ আহত নেতাকর্মীদের কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়ে মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর ভাতিজা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন ও আয়াতউল্লাহর নেতৃত্বে এ হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আমরা কি কর্মী সভাও করতে পারব না তাদের কারণে? এর আগেও একই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নে আমার কর্মী সভা ভণ্ডুল করা হয়েছে। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে হামলা করছে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল হাসান শাহীন বলেন, ‘বিএনপির লোকজন আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করেছে। এতে আমাদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আমরা কোনো হামলা করিনি। এ ছাড়া অস্ত্রের মহড়া ও গুলি চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
সন্ধ্যায় লালমাই উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ইউসুফ আলী মীর পিন্টুসহ নেতাকর্মীরা স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন। তারা বলেন, আমরা পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়ে দুইটি ইউনিয়নে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করি। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার বলেন, বেলঘর উত্তর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোকজনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে বিএনপির মঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, তবে লুটপাট হয়নি। এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ করেনি।