:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
গত আট বছর নয় মাসে ইউরোপ যাওয়ার পথে ১৫৫ বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী, সাগরপথে ইউরোপ যাত্রায় প্রথম ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১তম স্থানে রয়েছে।
২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোপ যাত্রায় প্রাণহানির তথ্য প্রকাশ করেছে আইওএম।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৭৯১ জন সিরিয়ার নাগরিক মারা গেছে। শীর্ষ ২০টি দেশের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম স্থানে আফগানিস্তান ও ১৭তম স্থানে পাকিস্তান। এ সময়ের মধ্যে আফগানিস্তানের ২৭০ জন এবং পাকিস্তানের ৯১ জন নাগরিক মারা গেছেন। তারা সবাই ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি বা স্থলসীমান্ত অতিক্রম করার পথে মারা গেছেন।
মহামারির মাঝেও উত্তাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে গত বছরের ২২ জুলাই প্রাণ যায় ১৭ অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশির। একই বছরের ২৪ জুন ২৬৭ জনকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। যাদের ২৬৪ জনই ছিল বাংলাদেশি। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার সময় একই বছরের ১৮ মে ৩৬ জন, ২৭ ও ২৮ মে ২৪৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। ওই বছর এভাবে মোট তিন হাজার ৩৩২ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার বা আটক করা হয়।
ইউএনএইচসিআর-এর তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত নানা দেশের ২২ লাখ ২৪ হাজার ২৪৫ জন মানুষ সাগরপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসে। একই সময়ে এ পথে আসতে গিয়ে মারা গেছে ২১ হাজার ৭০৭ জন।
চলতি বছরের আইওএম প্রকাশিত বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন ২০২২ অনুযায়ী, অভিবাসী পাঠানোয় বিশ্বে ষষ্ঠ এবং রেমিট্যান্স গ্রহণে অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
আর ইউরোপ নিয়ে ২০২০ সালের আইওএমের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে সমুদ্র ও স্থলসীমান্ত দিয়ে অনিয়মিতভাবে অভিবাসনের জন্য ইউরোপে প্রবেশ করেছেন মোট ১৩ হাজার ৩৫৪ বাংলাদেশি। এর মধ্যে মূল ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ৪ হাজার ৫১০ জন বাংলাদেশি। আর এর বাইরে পশ্চিম বলকানের দেশগুলোতে ৮ হাজার ৮৪৪ জন বাংলাদেশির প্রবেশ করেছেন।
বাংলাদেশ থেকে ১৮টি রুট ব্যবহার করে মানবপাচারের চেষ্টা চলে ইউরোপে। বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে ভূমধ্যসাগর। যা সেন্ট্রাল মেডিটেরানিয়ান রুট হিসেবে পরিচিত। সেখানে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু হয় মূলত লিবিয়া থেকে।
আর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর থেকে সংস্থাটি ৫ হাজার ৩৬০ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে। ইতালিতেই অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে পাঁচ হাজার ৮০ বাংলাদেশি।