:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
নাটোরে সেই কলেজছাত্রকে বিয়ের প্রায় ৮ মাসের মাথায় খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নাহারের কলেজছাত্র স্বামী মামুনকে আটক করে রেখেছে পুলিশ।
রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নাটোরে ছাত্র মামুনকে বিয়ে করে সংসার গড়া খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা খায়রুন নাহারের সংসার মাত্র আট মাসের মধ্যেই পরিসমাপ্তি ঘটল! খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদ।
ওসি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
ফেসবুকে ২০২১ সালের ২৪ জুন তাদের প্রথম পরিচয়। তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা নাহারের সঙ্গে একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মামুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের ৬ মাস পর তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ে মেনে নেয়নি। এর আগে ওই শিক্ষিকা বিয়ে করেছিলেন রাজশাহী বাঘা উপজেলার এক ছেলেকে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশি দিন টিকেনি। প্রথম স্বামীর ঘরে এক সন্তান রয়েছে বলেও জানা গেছে।
মামুন-নাহার দম্পতি নাটোর শহরের বলারাপাড়ার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলায় ভাড়া থাকতেন।
তিনি উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
ভবনের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী জানায়, রোববার ভোরে স্বামী মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান- তার স্ত্রী খায়রুন নাহার শেষ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন তার বাসায় গিয়ে খায়রুন নাহারের লাশ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। তারা মামুনকে বাসার মধ্যে আটকে পুলিশে খবর দেয়।
গত বছর ১২ ডিসেম্বর ছয় মাসের প্রেমের পর স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়া এক ছেলের জননী খায়রুন নাহার কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সারাদেশের সচেতন মানুষ ছাত্রকে শিক্ষিকার বিয়ের নিয়ে হাজারো মন্তব্য করে।
তখন বর ছাত্র মামুন জোরালোভাবে বলতে থাকেন- ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, মন্তব্য কখনো গন্তব্যে পৌঁছাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তার এমন বক্তব্যও সারাদেশে ভাইরাল হয়। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করা আলোচিত এই ছাত্র-শিক্ষিকা দম্পতির বিয়ের মাত্র আট মাসের মাথায় মৃত্যুর মাধ্যমে প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
এর আগে শিক্ষিকা মোছা. খায়রুন নাহার জানিয়েছিলেন, আগের স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। দিনের পর দিন তিনি ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে থাকতেন। এর মধ্যেই ফেসবুকে তার সঙ্গে কলেজছাত্র মামুনের পরিচয় হয়। মামুনের সঙ্গে কথা বলে তিনি শান্তি অনুভব করতেন।