:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
জামালপুরে গত কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার চারটি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ৭০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ১ হাজার ৬৭১টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসলামপুরের আমতলি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যমুনার পানি বাড়ায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, কুলকান্দি, বেলগাছা, নোয়ারপাড়া ও সাপধরী ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের লোকজন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন।
এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণেও পানি দেখা গেছে। স্থানীয় কয়েকজন বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ি, বাহাদুরাবাদ ও চিকাজানী ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং দুর্গম চরাঞ্চল আগেই প্লাবিত হয়েছে। এখন বন্যার পানি শহরের দিকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার চারটি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ৮৭টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯টি পরিবার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ত্রাণসহায়তা হিসেবে ৩৫০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৭ লাখ টাকা ও ৪ হাজার শুকনা প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। বিভিন্ন গ্রামের অভ্যন্তরীণ পাকা ও মাটির রাস্তার ওপর দিয়ে স্রোত বয়ে যাচ্ছে। বন্যার্ত মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করছেন। ইসলামপুর-নোয়ারপাড়া সড়কের ওপর দিয়ে রোববার কম পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সেখানে হাঁটুপানির স্রোত দেখা যায়। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেগে থাকা রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। অনেক লোকজন অন্যত্র সরে যেতে দেখা গেছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পানি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।