:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
সাইফার মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে জামিনে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান বিচারপতি সরদার তারিক মাসুদের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ শুক্রবার এই আদেশ দেয়।
ইমরান খানের সঙ্গে এ মামলার আসামি পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও জামিন দিয়েছে আদালত।
সাইফার মামলায় জামিন পেলেও ইমরানের কারাগার থেকে বের হওয়ার পথ এখনও নিশ্চিত হয়নি। অন্য কয়েকটি মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়ে আছে।
এই মামলায় প্রথমবারের মতো ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কোরেশিকে অভিযুক্ত করা হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে। পরে গত নভেম্বরে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এই মামলাকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং ঘোষণা দিয়েছিলেন, কারাগারে বিশেষ আদালত স্থাপন করে এই মামলা চালানো ‘বেআইনি’।
এরপর চলতি মাসে ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কোরেশির বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয়। তখন ইমরান খান অভিযোগ করে বলেন, তাঁর সরকারকে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এর আগেও একই অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তবে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ সময় তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওই সাইফার বা গোপন তারবার্তা পাঠানো হয়েছিল মূলত তাঁর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই।
গত বছর ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ইসলামাবাদে একটি তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেই তারবার্তা প্রকাশ করার জন্যই অভিযুক্ত হন ইমরান খান।
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায় তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের পর ৫ আগস্ট থেকে তিনি কারাভোগ করছেন ইমরান খান। তোশাখানা দুর্নীতি মামলা নামে পরিচিত ওই মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য হন।
নিম্ন আদালতের ওই দণ্ডের বিরুদ্ধে ইমরান খানের আপিল গতকাল বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আজ সুপ্রিম কোর্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করার কথা বলেছিল পিটিআই।
এদিকে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা দুই দিন বাড়িয়ে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। নির্বাচনে অযোগ্য হলেও আপিলের সুযোগ থাকায় ইমরান খান নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। তিনটি আসন থেকে তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা।
কারাগারে বসেই ৩ আসনে লড়বেন ইমরান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আসন্ন নির্বাচনে কারাগারে বসেই তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) ইমরানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আলি জাফর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ৫ আগস্ট ইসলামাবাদের সেশন জজ আদালত ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। তাকে রাজনীতি থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে সেশন জজ আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। তবে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসসহ বেশ কয়েকটি মামলার কার্যক্রম সচল থাকায় এখনও কারাগারেই আছেন তিনি।
আইএইচসি তোশাখানা মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে আর বাধা নেই ইমরানের। আগামী ফেব্রুয়ারিতে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে পাকিস্তানে।
বুধবার আদিয়ালায় ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আলি জাফর। সাক্ষাৎ শেষে কারাগারের বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ’নির্বাচনে ইমরান খান সাহেব দেশবাসীকে জানাতে চান যে আগামী নির্বাচনে তিনি তিনটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’