:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১ জানুয়ারী।
এই মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রোববার রাত ৮ টা ১৫ মিনিটে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা রায়ের এই দিন ধার্য করেন। শেষ দিনের যুক্তি উপস্থাপনে রোববার বেলা ১১ টা ৩০ থেকে রাত ৮ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আদালতে বসে ছিলে ড. ইউনূসসহ অন্যরা।
মামলার অন্য তিন বিবাদী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আজ রাত সোয়া আটটার দিকে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ১ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন। যুক্তিতর্ক শুনানিকালে ড. ইউনূসসহ চারজনের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন।
শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ মামলায় আজ বেলা ১১টায় যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার বিবাদীকে মামলা থেকে খালাস দেওয়ার আরজি জানান।
খুরশীদ আলম খান আরও জানান, আজ প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর তিনি (খুরশীদ আলম খান) ঘণ্টাখানেক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর আবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, যা সোয়া আটটার দিকে শেষ হয়।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাঁদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।
এ মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন বিবাদীর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তা নবায়নের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের প্রকল্প নোকিয়া কেয়ার ও পল্লীফোনের কার্যক্রম তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। মেয়াদ শেষে তা নবায়ন হয়। যেহেতু গ্রামীণ টেলিকমের কার্যক্রম চুক্তির ভিত্তিতে পরিচালিত, তাই গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ড. ইউনূসসহ বিবাদীরা ৯ নভেম্বর আদালতের কাছে লিখিত বক্তব্যে বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান মামলাটি করেছেন।
এ ছাড়া গত ৩০ মে ড. ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরও ১২ জনের নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।