:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পুনবর্হাল হচ্ছেন দলের খুলনা মহানগরের সাবেক সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তাঁর দেওয়া ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এর আগে, নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপির সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, ৫ থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড কমিটির পাঁচ শতাধিক নেতা পদত্যাগ করেন। দলের কর্মকাণ্ডে এখনও তাঁরা নিষ্ক্রিয়। বর্তমান মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটিতে তাঁদের কারোরই জায়গা হয়নি। ওয়ার্ডের নতুন কমিটি থেকেও বাদ পড়েছেন তাঁরা। দলের বিপুলসংখ্যক নেতাদের বাইরে রেখেই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি। মহানগর বিএনপির কমিটিতে তাঁদের সমন্বয়ের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বাদ পড়েন মঞ্জু ও তাঁর অনুসারীরা। গত ১২ ডিসেম্বর দলের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় তাঁকে। ২৫ ডিসেম্বর তাঁকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মঞ্জুর প্রায় ৪৩ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এমন পরিণতি মানতে পারেননি খুলনার বিএনপি নেতারা। এক দিন পর থেকেই শুরু হয় গণপদত্যাগ।
বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে ছাত্রদল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মঞ্জু। ১৯৮৭ সাল থেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৯২ সাল থেকে সাধারণ সম্পাদক, ২০০৯ সাল থেকে গত ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ ৪৩ বছরে খুলনা বিএনপি এবং নজরুল ইসলাম মঞ্জু যেন এক নামেই জড়িয়ে ছিলেন। অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নিজের লোকদের সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ছিল প্রতিপক্ষের।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি সূত্র জানায়, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে গত জুন মাসে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। সেখানে দলের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্যাখ্যা জমা দেন তিনি। জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঞ্জুকে ডেকে পাঠান বিএনপি মহাসচিব। সেখানে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আবারও ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। একাধিক বৈঠকের পর মঞ্জু স্বীকার করেন, সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল না। তবে খুলনায় দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়ে বরাবরই আপত্তির কথা জানিয়েছেন মঞ্জু।
গত মাসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। দলের সিনিয়র নেতারা মঞ্জুকে পুনর্বহালের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নানা কারণে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সময় হলেই সব জানতে পারবেন।’
আগামী ২২ অক্টোবর খুলনা বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। এর আগেই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের আশা করছেন মহানগর বিএনপির সাবেক নেতারা।