:: ঝালকাঠি প্রতিনিধি ::
ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস উল্টে পুকুরে পরে ১৭ জন নিহত হয়েছে। বাসটিতে ৫০ জনের মতো যাত্রী ছিল।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন- পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তারেক রহমান (৪৫), ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য ভান্ডারিয়ার সালাম মোল্লা (৬০), তাঁর ছেলে শাহীন মোল্লা (২৫), ভান্ডারিয়া উপজেলার পশুরবুনিয়া এলাকার জালাল হাওলাদারের শিশুকন্যা সুমাইয়া (৬), একই উপজেলার রিজার্ভ পুকুরের পাড় এলাকার রহিমা বেগম (৬০), তাঁর ছেলে আবুল কালাম হাওলাদার (৪৫), একই উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠি এলাকার রাবেয়া বেগম (৮০), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরবোয়ালিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৮), মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার মো. রিপনের স্ত্রী আইরিন আক্তার (২২), তাঁর শিশুকন্যা রিপা মনি (২), ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার নিজামিয়া এলাকার খাদিজা বেগম (৪৩), তাঁর মেয়ে খুশবু আক্তার (১৭), দক্ষিণ রাজাপুরের বলাইবাড়ী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. নয়ন (১৬) ও কাঁঠালিয়া উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের সালমা আক্তার (৪২)।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৭ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা শঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির নাম বাশার স্মৃতি পরিবহন। ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালে যাচ্ছিল বাসটি। পথে ছত্রকান্দা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক ফিরোজ কুতুবী বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।’
জেলা সিভিল সার্জন অফিসার ডা. জহিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম আক্তারুজ্জামান বলেন, ভান্ডারিয়া উপজেলার ছত্রকান্দায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেয়েছি বাসটি বরিশালে যাচ্ছিল।
ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আফরুজুল হক টুটুল বলেন, খুলনা থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বাসটি ছত্রকান্দা এলাকায় আসার পর একটি অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে যায়। এ সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি উল্টে সড়কের পাশে থাকা পুকুরে পড়ে যায়।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২০ জনকে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা শঙ্কাজনক।
আফরুজুল হক টুটুল বলেন, বাসটির ভেতরে আর কেউ আছে কি না তা দেখতে এখনো তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে বাসটিতে ঠিক কতজন যাত্রী ছিলেন তা জানা যায়নি। ক্রেন দিয়ে গাড়িটি তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আহত একজন যাত্রী জানিয়েছেন, চালক বাসটি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনায় খুলনা-ঝালকাঠি মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।