:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। গত ৩১ মে থেকে ১৮ জুনের মধ্যে তারা ইন্তেকাল করেন। এর মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের মধ্যে ১৮ জন মক্কায়, চারজন মদিনায় ও একজন তায়েফে মারা যান।
মরহুম হজযাত্রীদের মধ্যে সর্বশেষ রংপুরের বদরগঞ্জের শহীদুল্যা মন্ডল (৭৬) গত ১১ জুন তায়েফে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এছাড়া ১২ জন হজযাত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একজন মারা গেছেন হিট স্ট্রোকে। স্বাভাবিকভাবে মারা গেছেন তিনজন। একজন মারা গেছেন হিট স্ট্রোকে। চারজন হজযাত্রীর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
মরহুম ২৩ বাংলাদেশি হজযাত্রীরা হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগন্জের আব্দুল ওয়াহেদ (৪৬), রাজধানীর ডেমরার শাহানারা বেগম (৬৩), পাবনার চকছাতিয়ানী মাঠপাড়ার ডা. শফিকুল ইসলাম (৬৩), শেরপুরের ঝিনাইঘাতির আলী হোসাইন (৬৭), রাজধানীর খিলগাঁওয়ের আইয়ুব খান (৪৮), পঞ্চগড়ের শহীদুল আলম (৬৭), বগুড়ার আদমদিঘীর রোকেয়া বেগম (৬২), নওগাঁর আত্রাইয়ের আদম উদ্দিন মন্ডল (৬২), রংপুর সদরের মতিউর রহমান (৬৮), গাইবান্ধার সাঘাটার আমজাদ হোসেন প্রধান (৫৭), নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আব্দুল মান্নান (৬০), রংপুরের বদরগঞ্জের শহীদুল্যা মন্ডল (৭৬), চট্রগ্রামের কোতয়ালীর আবুল হাশেম (৬১), সাতক্ষীরা সদরের মাখফুরা খাতুন (৬১), চট্রগ্রামের ফিরোজ শাহ কলোনীর আব্দুল মতিন (৬০), মাগুরার মোহাম্মদপুরের সৈয়দ নিয়ামুল হক (৬২), কুমিল্লার দেবিদ্বারের আবুল হোসেন ভূইয়া (৬৯), রাজশাহীর রাজপাড়ার শাহজান আলী (৬৬), কুমিল্লার বরুড়ার আবুল কাশেম (৪৫), কক্সবাজারের চকরিয়ার রিদুয়ান (৬৩), নারায়নগজ্ঞের আড়াইহাজারের আব্দুল গফুর (৬০), যশোরের বাঘারপাড়ার আব্দুল কুদ্দুস খাঁন (৬৩) এবং টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর আব্দুল আজিজ (৬৩)।
মরহুম হজযাত্রীদের মধ্যে আব্দুল মতিন, সৈয়দ নিয়ামুল হক, আবুল হোসেন ভূইয়া ও আবেদন আজিজকে মদিনার বাকীউল গরকা (জান্নাতুল বাকী) কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অন্যদের দাফন করা হয়েছে মক্কার শরাইয়া কবরস্থানে।
মোয়াল্লিম মাওলানা ও মুফতি হোছাইন আহমদ বলেছেন, হজযাত্রীরা মহান আল্লাহর মেহমান। এ জন্য সৌদি আরব সরকার তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মরহুম হজ যাত্রীদের দাফন-কাফনের সব ব্যবস্থা করে থাকে।
গতকাল বাংলাদেশ হজ অফিস মক্কার কনফারেন্স কক্ষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি হজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রমের খোঁজ খবর নেন এবং এ পর্যন্ত কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার),ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) এবং প্রশাসনিক দলের দলনেতা মো. মতিউল ইসলাম, কনসাল জেনারেল জনাব মোহাম্মদ নাজমুল হক, কাউন্সিলর (হজ) মো. জহিরুল ইসলাম, প্রশাসনিক প্রথম ও দ্বিতীয় দলের সদস্যবৃন্দ, চিকিৎসক এবং আইটি দলের দলনেতাসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটা খালি রেখেই হজের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে সরকার।
আগামী ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২১ মে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ২২ জুন। অন্যদিকে হজ শেষে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ২ জুলাই। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২ আগস্ট।