:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
২০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
মির্জা আব্বাস ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে তিনি খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মিসেস আফরোজা আব্বাসের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৮ টাকার সম্পদ প্রকৃতপক্ষে তার স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় ও মাধ্যমে অবৈধ উৎসের আয় থেকে অর্জিত। মির্জা আব্বাস সংসদ সদস্য, মেয়র ও মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আসামিরা (স্বামী-স্ত্রী) ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে ১৬ আগস্ট ২০০৭ পর্যন্ত আফরোজা আব্বাসের নামে সর্বমোট ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৮ টাকার সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মঞ্জুরি আদেশ মোতাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর অভিযোগপত্র নম্বর ৬৬ অনুযায়ী মঙ্গলবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১৯ সালের ৭ জুলাই দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। দুদকের দাবি, তদন্তে অবৈধ সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করার কৌশল অবলম্বন করার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। দু’জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় এবং সেই সঙ্গে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৮; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের সচিব বলেন, এখানে পলিটিক্যাল কোনো যোগসূত্র নেই। দুদক তার নিজস্ব আইন-বিধি মেনে তদন্তকাজ পরিচালনা করে থাকে।
মির্জা আব্বাস বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। আফরোজা আব্বাস বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি। মির্জা আব্বাস বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে পুলিশ মির্জা আব্বাসকে তাঁর শাহজাহানপুরের বাসা থেকে আটক করে। ওই রাতেই রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আটক করা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও। দুজনকেই পরে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গতকাল সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানীতে নকশাবহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণের অভিযোগে এই মামলা করা হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার বিএনপির কাছে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে এখন এই পথে হাঁটছে।