:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
মেয়ের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন নীলফামারীর ডিমলার মারুফা আকতার। মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং মারুফা আকতার একই কলেজের বিএম শাখা থেকে পরীক্ষায় বসেছেন।
মা ও মেয়ে দুজন ডিমলা উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় একসঙ্গে অংশ নিয়ে মেয়ের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মারুফা আকতার। তিনি এসএসসিতে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং তার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা পেয়েছিলেন জিপিএ-৩।
মারুফা আক্তারের বাবার বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা গ্রামে। বিয়ে হয় একই উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের পুন্যারঝার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। সাইদুল ইসলাম পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বড়। দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেণিতে, তৃতীয় মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
২০০৩ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায় মারুফা আক্তারের। এরপর থেমে যায় তার লেখাপড়া। পরপর চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে কেটে যায় ১৫ বছর। তবে লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা তার রয়েই যায়। সেটিরই প্রতিফলন হিসেবে নিজের সুপ্ত ইচ্ছাশক্তির জোরে নিজের মেয়ের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন মাধ্যমিক। এবার বসেছেন উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষায়।
মারুফা আক্তার জানান, নিজের ইচ্ছা ও স্বামী-সন্তানদের অনুপ্রেরণায় নবম শ্রেণি থেকে আবার পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ভর্তি হন ছোটখাতা ফাজিল মাদ্রাসায়। সেই সময় তার মেয়েও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এরপর ২০২০ সালে মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন তিনি।
মারুফা আকতার বলেন, সমাজের আর দশটা মানুষের মতো আমিও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে নিজের পরিচয় দিতে পারি, সেজন্য কষ্ট করে পড়াশোনা আবার শুরু করেছি। ইচ্ছা আছে এইচএসসি পাস করে দেশের ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার।
মারুফা আক্তারের স্বামী সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার স্ত্রীর ইচ্ছার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করব।