:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ সময় আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় তিনি ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর হেফাজতে থাকবেন। আদালতে এনএবি তাঁর ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল।
ইতিপূর্বে তোশাখানা মামলায় ইসলামাবাদের একটি আদালতে ইমরান খান অভিযুক্ত হয়েছেন। তিনি গত বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন।
এর আগে আজ বুধবার ইসলামাবাদে পুলিশ লাইনসে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে হাজির করা হয়েছে। এনএবি মামলাটি তদন্ত করছে।
শুনানির শুরুতে এনএবি ইমরানের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করে। তবে এর বিরোধিতা করেন পিটিআই প্রধানের আইনজীবী খাজা হারিস। আইনজীবী বলেন, ‘আল-কাদির ট্রাস্ট মামলাটি ব্যুরোর পরিধির মধ্যে পড়েনি। এমনকি এনএবি এখনো তদন্ত প্রতিবেদন শেয়ার করেনি।’
খাজা হারিস বলেন, ‘প্রত্যেকেরই সুষ্ঠু বিচারের অধিকার আছে। এই শুনানি একটি খোলা আদালতে হতে পারত। আল-কাদির ট্রাস্টের আওতায় যে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সেখানে বিনামূল্যে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’
এনএবির আইনজীবী বলেন, ‘যখন ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয় তখন তাকে গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজ দেখানো হয়েছিল।’ তদন্ত প্রতিবেদনের জবাবে এনএবির আইনজীবী বলেন, ‘যথাযথ কাগজপত্র প্রয়োজনে জমা দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি দুর্নীতির মামলা, যার প্রমাণ দিয়েছে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।’
শুনানির সময় ইমরান খান আদালতকে বলেন, ‘যখন আমাকে গ্রেফতার করা হয়, তখন পরোয়ানা দেখানো হয়নি। ব্যুরোর অফিসে নেওয়ার পর সেটি দেখানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ধরে আমি বাথরুমে যাইনি। আমার একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন।
গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসলামাবাদ কমিশনার দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুলিশ লাইনসে দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হাজির করা হবে। তবে সূত্র জানায়, ইমরানকে সেখানেই আটক করে রাখা হয়েছে। দুই মামলার অন্যটি হলো প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পাওয়া উপহার রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগ।
এসএবির শুনানিকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কনটেইনার বসিয়ে আশপাশের সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্ত্বর থেকে পাকিস্তানের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ইমরান খানকে গ্রেফতার করে।
ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তাঁর দল পিটিআই পাকিস্তান ‘অচল’ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছে। তাঁর সমর্থকেরা দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। রাজধানী ইসলামাবাদসহ লাহোর, পেশোয়ার ও করাচিতে সহিংস বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। মুলতান ও কোয়েটা থেকেও বিক্ষোভের খবর আসে। পেশোয়ারে সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু ও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। পিটিআই ও প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে।
ইসলামাবাদ পুলিশ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থাপনা ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও পাঞ্জাব সরকার।