:: মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা ::
হইচইয়ের ওয়েব সিরিজ ‘কাইজার’ দেখলাম। নির্মাণ ভালো, নিশোর অভিনয় বরাবরের মতোই অসাধারণ; সবচেয়ে দারুণ মজার সংলাপগুলো।
কিন্তু কাহিনীর ব্যাপারে আমার দুইটা কথা বলার আছে। এই কাহিনীকে আমি বলব বাংলাদেশে সমকামিতা স্বাভাবিক করার প্রথম পদক্ষেপ এটা। এটাই প্রথম ধাপ বলা যেতে পারে।
এই সিরিজে সমকামিতা দেখানোর কোনোই দরকার ছিল না। নিলয়ের সাথে সাবা-জয়া দুজনেরই গোপনে প্রেম ছিল-এরকম কাহিনী দেখালেও প্লট একই থাকত। সমকামিতা এখানে পুরাই আরোপিত এবং খুব সম্ভবত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
নাহ, নাটক-সিনেমায় আদর্শের বুলি কপচাতে হবে – এটা আমি বিশ্বাস করি না। নাটক-সিনেমায় বাস্তব সমাজের চিত্র উঠে আসবে – এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশে সমকামিতা কি এখনও বহুল প্রচলিত বা খুব খোলামেলা কিছু? কয়টা নিউজ দেখাতে পারবেন?
যে জিনিস সমাজে গ্রহণযোগ্য না, যে জিনিস প্রকাশ্যে ঘটছে না, নিউজে আসছে না, আপনি যদি নাটক-সিনেমার মাধ্যমে সেটাকে তুলে ধরেন, তার অর্থ হচ্ছে আপনি সেটার স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করছেন।
আমার বলায় কিছুই আসবে-যাবে না, তারপরেও যেহেতু বলার মাধ্যম আছে, তাই বলে রাখলাম। সমকামিতাকে স্বাভাবিক করার এই প্রচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে রাখলাম।
আজকে একটা ওয়েব সিরিজে কাহিনীর মধ্যে একটু সমকামিতা আমদানি করা হয়েছে, কালকে আরেকটা সিরিজে আরেকটু দেখানো হবে, দুই বছর পরে ওয়েব কন্টেন্টের নামে পর্ন দেখানো হবে। এবং দশ বছর পরে এমন অবস্থা হবে, আপনি সেটার সমালোচনাও করতে পারবেন না।
আমি মত প্রকাশের এবং সৃজনশীলতার স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কিন্তু অবাধ স্বাধীনতা বলে কিছু নাই। সেটা বাংলাদেশেও নাই, ফ্রান্সেও নাই। কিছু উদারপন্থী অবস্থা, কিছু রাজনীতির পরিচিত মুখ এসে সব স্বাধীনতাতেই টান পড়ে। তাহলে আমাদের যে ধর্মীয় এবং সামাজিক মূল্যবোধ, সেটার ক্ষেত্রে কেন আমরা সীমাহীন ছাড় দিবো?
আমার মতে এটার ব্যাপক প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
লেখক: ব্লগার ও লিবিয়া প্রবাসী প্রকৌশলী। স্পাই স্টোরিজ: এসপিওনাজ জগতের অবিশ্বাস্য কিছু সত্য কাহিনী তাঁর আলোচিত বই।