কমলাপুর ফুটওভারব্রিজ এখন মৃত্যুফাঁদ

:: তাহসিন আহমেদ ::

রাজধানীর কমলাপুরে ফুট ওভারব্রিজের বিভিন্ন অংশে অতিরিক্ত মরিচা ধরে সিঁড়িগুলোতে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে ফুটওভারব্রিজটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ওভারব্রিজে উঠতে নামতে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। বিশেষ করে রাতের বেলা লোহার পাতের সিঁড়ি পার হবার সময় পথচারীরা অসাবধান হলেই পা ফসকে ওই গর্তের মধ্যে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার কবলে পরছেন। 

সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হলেও ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে পথচারীদের।  উঠতে নামতে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। ব্রিজের সবুজকানন থেকে কমলাপুর অংশ পর্যন্ত প্রায় সব সিঁড়ি ভাঙা নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কমলাপুর রেলওয়ে ফুট ওভারব্রিজ ঢাকার সব থেকে বড় ফুটওভারব্রিজ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ  রেলওয়ের মালিকানাধীন এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পারাপার হয়ে থাকেন। সবুজকানন থেকে শুরু হয়ে কমলাপুর হয়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে বাসাবো এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে লোহা, স্টিল ও কনক্রিট দিয়ে তৈরি দীর্ঘ ওভারব্রিজটি।


সবুজকানন এলাকায় ওভারব্রিজের একটি প্রান্ত। এই প্রান্ত দিয়ে ব্রিজে উঠতে লোহার পাতের তৈরি প্রায় ৩৫টি সিঁড়ি পার হতে হয়। সিঁড়িগুলো অত্যন্ত নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ। সিঁড়িগুলোতে অতিরিক্ত মরিচা ধরে অবস্থা এমন হয়েছে যে পা দিতেই সেগুলো নিচের দিকে দেবে যাবার মত অবস্থা হয়েছে। লোহার পাতের সিঁড়ির কয়েকটির ডান পাশে, কয়েকটির বাম পাশে, আবার কোনোটার মাঝখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চলতে গিয়ে পথচারীদের খুব সাবধানে পা ফেলতে হচ্ছে।  প্রতিদিন যারা এই ওভারব্রিজ ব্যবহার করছেন তাদের অভ্যাস হয়ে গেলেও নতুন পথচারী ওভারব্রিজে ওঠার চেষ্টা করলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। কারণ ওই নতুন পথচারী জানেন না কোন সিঁড়ির কোথায় পা ফেলতে হবে। 

বাসাবোর বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বেসরকারী চাকরিজীবী জানান, প্রতিদিন তিনি এই ওভারব্রিজ দিয়ে মতিঝিলে অফিসে করেন। তিনি অবিলম্বে ওভারব্রিজটি সংস্কারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আশা করছেন। তিনি বলেন, এই ওভারব্রিজ ব্যবহারের কারণে তার সময় ও অর্থ দু’টিই বেঁচে যায়।

সরকারি এই চাকরিজীবির মত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ওভারব্রিজটি পার হচ্ছেন। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ওভারব্রিজটি দিন দিন মৃত্যুঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। 

এই ফুটওভার ব্রিজ নিয়মিত ব্যবহার করেন এমন একজন পথচারী বদরুল হুদা জানান, ‘রাতের বেলা তো চলাই যায় না। তিনি বলেন, ব্রিজটি এই এলাকার মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ এই ব্রিজের কারণে কমলাপুর, বাসাবো, মাদারটেক, দক্ষিণগাঁও, নন্দীপাড়া,  সবুজবাগ, খিলগাঁওয়ের বসবাসকারীরা  মতিঝিল এলাকায় দ্রুত  সময়ের মধ্যে অর্থের সাশ্রয় করে চলাচল করতে পারেন। 

কমলাপুর প্রান্তে সিমেন্ট বালুর স্লাব দেয়া সিঁড়ি বানানো হয়েছে যার অধিকাংশ ঠিকমতো হয়নি। যার কারণে পা দিতেই সেগুলো নড়ে ওঠে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।  পথচারীরা  জানান, বহুল ব্যবহৃত এই ফুটওভারব্রিজ এখনই সংস্কার শুরু না করলে এটা অচল, নাজুক অবস্থায় থেকে মৃত্যুঝুঁকি বাড়াবে।  এই অবস্থায় থাকলে শুধু দুর্ঘটনায় আহত নয়, পড়ে গিয়ে পথচারীর কারো মৃত্যুও হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও পথচারীরা অবিলম্বে কমলাপুর ফুট ওভারব্রিজের মেরামত ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *