অ্যাপেন্ডিসাইটিস কী, কেন এবং উপসর্গ

হঠাৎ করেই শুরু হল প্রচণ্ড পেটব্যথা। ব্যথাটি ধীরে ধীরে বেড়ে প্রথমে নাভির চারপাশ থেকে পরে তলপেটের একটু ডান দিকে গিয়ে স্থির হল। এমন অবস্থায় ডাক্তারের কাছে গিয়ে নানা রকম পরীক্ষা করা হল। ডাক্তরি হিসেবে, রোগীর অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে, সার্জারি প্রয়োজন।

আসুন জেনে নেয়া যাক এই অ্যাপেন্ডিসাইটিস কী, কেন এবং উপসর্গ কি?

অ্যাপেন্ডিসাইটিস কী
আমাদের বৃহদন্ত্র নলের মতো ফাঁপা। বৃহদন্ত্রের তিনটি অংশের মধ্যে প্রথম অংশ হচ্ছে সিকাম। এই সিকামের সঙ্গে ছোট একটি আঙ্গুলের মতো মাংসের বৃদ্ধি হল অ্যাপেনডিক্স। কোনো কারণে যদি এর মধ্যে পাঁচিত খাদ্য, মল বা কৃমি ঢুকে যায়, তাহলে শরীরে রক্ত ও পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। নানান জীবাণুর আক্রমণে অ্যাপেনডিক্সের ঐ অংশে বিভিন্ন উপসর্গও দেখা দিতে পারে। আর একেই বলা হয় অ্যাপেনডিসাইটিস।

উপসর্গ
১. প্রথমে নাভির চারপাশ থেকে পরে তলপেটের একটু ডান দিকে গিয়ে স্থির হয়। সময়ের সঙ্গে ব্যথার পরিমাণ বাড়তে থাকে।

২. রোগীর তলপেটে হাত দিলেই ব্যথা অনুভূত হয়, শক্ত কিছু হাতে অনুভূত হতে পারে।

৩. বার বার বমি ভাব হয়, কারো ক্ষেত্রে বমি হতে পারে।

৪. রোগীর দেহে জ্বর আসতে পারে।

৫. অ্যাপেনডিক্সটি অনেক সময় ফেটে ফ্লুইড পেটের ভেতরে অন্যান্য ফাঁকা স্থানে (abdominal cavity) ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে সাময়িক ভালোলাগা কাজ করে। বেশি সময় অতিবাহিত হলে অবস্থা আগের থেকে খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে গ্যাংগ্রিন বা পঁচন ধরতে পারে, অন্ত্র ছিদ্র হয়ে যাওয়াসহ রোগীর মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

পরামর্শ
অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়লে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সার্জারি করে অ্যাপেনডিক্স অপসারণ করা উচিৎ। তবে সার্জারির সুযোগ না থাকলে মুখে কিছু না খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। রাইস টিউব দেয়া যেতে পারে, ব্যাথা নাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া যেতে পারে। এছাড়া পায়খানা-প্রস্রাব সচল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সার্জারিতে অ্যাপেনডিক্স কেটে ফেলে দিলে পুনরায় অ্যাপেনডিসাইটিস হওয়ার কোন আশঙ্কা থাকে না।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *