ডিপোতে আরও দুই মরদেহের সন্ধান

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আরও দুজনের লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ বেলা একটার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার উদ্ধার করা হয়। ফেনী ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দি বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আজ বেলা ১২টা ৭ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ আনার জন্য দুটি ব্যাগ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে। অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে মরদেহ শনাক্ত করার কাজ চলছে। অনেক জায়গায় হাড়-হাড্ডি পড়ে আছে সেগুলো সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উদ্ধার হওয়া দুটি লাশের মধ্যে একটি লাশ ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীর ও অপর লাশটি কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীর বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।

এ নিয়ে গত তিন দিনে প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুসারে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। যদিও সিভিল সার্জনের হিসাব মতে মৃতের সংখ্যা ৫১ জন।

গত শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো লোডিং স্টেশন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এর দেড় ঘণ্টা পর একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।

সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে নিহত ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মারা যাওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সোমবার ২১ জনের খোঁজে ৩৭ জন স্বজন নমুনা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার আরও দুই জন স্বজন নমুনা দিয়েছেন। সারাদিনের অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেবো আমরা বুধবার পর্যন্ত থাকবো কিনা। আমাদের সিআইডির টিম চলে যাওয়ার পর কোনও স্বজন নমুনা দিতে চাইলে ঢাকায় গিয়ে দিতে হবে।’

মৃতদের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জন হলেন

কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানাধীন সাতবাড়িয়া সামারা এলাকার শামসুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৫০), ভোলা জেলার সদর থানাধীন দক্ষিণ কালিয়া এলাকার হাবিবুর রহমান (২৩), বাঁশখালী উপজেলার চনুয়া মধুখালী এলাকার আবদুল মজিদের ছেলে রবিউল আলম (২৪), একই এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে মমিনুল হক (২৪), বাঁশখালী উপজেলার চারিয়াপাড়া এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মহি উদ্দিন (২২), বাঁশখালী উপজেলার নাপুরা এলাকার হাসান আলীর ছেলে তোফায়েল ইসলাম (২২), নোয়াখালী জেলার টাটখীল থানাধীন শোল্লা বানসা এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যম মহাদেবপুর এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে মো. সোলাইমান, নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন নিজাম উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন (২৮), যশোর বাঘারপাড়া থানাধীন নরসিংপুর এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে ইব্রাহিম (২৭), পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ী থানাধীন তুসখালী এলাকার মৃত সাত্তার জমাদ্দারের ছেলে ফারুক জমাদ্দার (৫০), চট্টগ্রামের হালিশহর থানাধীন নারিকেলতলা দক্ষিণ হালিশহর এলাকার আব্দুস সবুরের ছেলে হারুন অর রশিদ (৫৫), মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানাধীন পুটিকলিন এলাকার মো. আছির ছেলে মো. নয়ন (২২), চট্টগ্রামের মীরসরাই থানাধীন সোনাপাহাড় এলাকার ননামিয়া বাড়ির শাহজাহানের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৯), ফেনী জেলার ফুলগাজী থানাধীন আনন্দপুর এলাকার আমিন উল্লাহ জমাদ্দারের ছেলে শাহাদাত উল্লাহ জমাদ্দার, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন পূর্ব চালিয়াপাড়া এলাকার জাফর মাহমুদের ছেলে মো. রিদুয়ান (২৫), চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানাধীন কালাপানিয়া এলাকার মোবাসের ইসলামের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (৪১), ফেনী সদর থানাধীন নাসিমপুর এলাকার আবু ইউসুফের ছেলে সালা উদ্দিন কাদের চৌধুরী (৪২), খুলনার শুকধারা এলাকার আব্দুস সাত্তারের তরফদারের ছেলে শাকিল তরফদার (৪৫), রাঙ্গামাটি সদরের কাজাচুরা এলাকার চিত্তরঞ্জন চাকমার ছেলে নিপন চাকমা (৪৫), মানিকগঞ্জ শিবালয় এলাকার মো. পান্না মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (২২), হালিশহর থানাধীন আব্দুস সবুরের ছেলে মো. হারুন (৫৫) এবং শেরপুর সদরের মো. আকরাম হোসেনের ছেলে রমজানুল ইসলাম রনি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *