১০১টি বই দিয়ে ঘর বাঁধলেন কবি নিখিল নওশাদ

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

বিয়ের দেনমোহর হিসেবে ১০১টি বই দিয়ে ভালবাসার মানুষ সান্ত্বনা খাতুনকে বিয়ে করে ঘর বাঁধলেন কবি নিখিল নওশাদ। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গোশাইবাড়ি কাজি অফিসে আলোচিত এ বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে নিখি।

নিখিল বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের সাতরাস্তা গ্রামের শামছুল হকের ছেলে । সান্ত্বনা সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে।

নিখিল ‘বিরোধ’ নামের একটি ছোট কাগজের সম্পাদক। প্রায় এক দশক ধরে কাব্য চর্চার পাশাপাশি বেসরকারি একটি কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। নিখিল ও সান্ত্বনা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কবিতার সূত্র ধরেই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সান্ত্বনার সঙ্গে নিখিলের পরিচয়। পরিচয় থেকে ভালোলাগা ও ভালোবাসা। অবশেষে  দু’জনই বিয়ে করে ঘর বাঁধলেন। সান্ত্বনা বর্তমানে বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক। 

নববধূ সান্ত্বনা বলেন, নিখিলের কবিতা পড়ে ওর প্রেমে পড়েছি। ওর কবিতা খুব ভালো লাগে। সোনা-দানা, টাকাকড়ি আমার কাছে মূল্যহীন। বই আমার কাছে অমূল্য সম্পদ। এ কারণে বিয়ের দেন মোহরানা হিসেবে ১০১টি বই চেয়েছিলাম। আমার পছন্দের বইয়ের একটি তালিকা ধরিয়ে দিয়েছিলাম নিখিল নওশাদকে।

নিখিল জানান, এক সপ্তাহ ধরে ঢাকা ও বগুড়ার বিভিন্ন দোকান ঘুরে সান্ত্বনার দেওয়া তালিকার ৭০টি বই কেনা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৩১টি বই এখনো মেলাতে পারেননি। কাবিননামায় দেনমোহরের ৩১টি বই বাকি লিখতে হয়েছে। দুই পরিবারের সম্মতিতে শুক্রবার বাদ জুমা ধুনট উপজেলার বড়িয়া গ্রামে নিখিলের বোনের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হওয়ার কথা ছিল। সেখানে কাজি সাহেব ১০১টি বই দেন মোহরানা দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করতে রাজি না হওয়ায় একই দিন সন্ধ্যা ৭টার সময় গোশাইবাড়ি ইউনিয়নের কাজি আব্দুল হান্নান নান্টু কাজির অফিসে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। 

গোশাইবাড়ি ইউনিয়নের কাজি আব্দুল হান্নান নান্টু বলেন, আমার প্রায় ৪০ বছরের কাজির কাজের অভিজ্ঞতায় ১০১ বই দেনমোহর দিয়ে ব্যতিক্রম বিয়ে কখনো রেজিস্ট্রি করিনি। তিনি নবদম্পতির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।  

নবদম্পতি জানান, বিয়ের পর পারিবারিক একটা গ্রন্থাগার  গড়ে তুলবেন তারা। সেখানে দেনমোহরের প্রিয় ১০১টি বই সাজিয়ে রাখবেন। প্রিয় বইয়ের তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ মুজতবা আলী ছাড়াও দুই বাংলার জনপ্রিয় ও বিদেশি লেখকের বই আছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *