খোকার শেষ ইচ্ছা পূরণ হোক

:: তৌহিদ শাহীন ::

রাজনীতিবিদ সাদেক হোসেন খোকা বিরোধী দলের জন্য শত্রু। শুধু খোকা না। যে কোন রাজনীতিবিদ প্রতিপক্ষের জন্য শত্রুসম। এরকম মনে না করলে রাজনীতির খেলায় খেলা যায় না। যখন যেই দল ক্ষমতা থাকুক না কেন প্রতিপক্ষকে গায়েল করেই তাদের ঠিকে থাকতে হয় রাজনীতির মাঠে। ব্রিটিশদের দেশ ত্যাগের পর থেকে ভারত তারপর ভারত পাকিস্থান, তারপর ভারত পাকিস্থান বাংলাদেশ যাই বলি না কেন, জিন্নাহ, শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী, মুনায়েম, নাজিমুদ্দিন, আইয়ুব থেকে স্বাধীন বাংলায় আওয়ামীলীগ, তারপরে বিএনপি, তারপরের জাতীয় পার্টি সবাই ঠিকে থেকেছেন নিজেদের ক্ষমতার ব্যবহার করে কিংবা অপব্যবহার করে। এখানে বিরোধী দল সর্বদা নিষ্পেষিত হবেই হবে। এটা তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতি। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম একটা অধ্যায় আছে। যে ইতিহাস পুরো বাংলাদেশকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারে কিংবা এক করে ফেলতে পারে। সে ইতিহাসের নাম হল মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার এ যুদ্ধ মানুষকে এক বন্ধনে আবদ্ধ করে ফেলতে পারে কিংবা আলাদা দুই শ্রেণীতে ভাগ করে ফেলতে পারে। দুই শ্রেণীর প্রথম শ্রেণীই বাংলাদেশে বিশ্বাসী মানুষজন। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে বুকে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে না। আসলে তারা বাংলাদেশেই বিশ্বাসী নন। তারা বাংলাদেশী নয়। রাজনীতিবিদ খোকা যাই হোক, মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তি খোকা একজন মুক্তিযুদ্ধ। যে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবসা করছি। আমাদের চলনে বলনে, বিপদে আপদে সকল মুশকিলআসান হিসেবে কাজ করছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ব্যবসায়ী কেউ কেউ অপব্যবহারও করছেন। দেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে হয়তো কেউ কিছু বলছে না। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ব্যবসার প্রধান হাতিয়ার। তাহলে কেন মৃত্যুপথযাত্রী মুক্তিযোদ্ধার এক রকম আক্ষেপ নিয়ে মরতে হবে, যে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলাম কিন্তু দেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস নিতে পারলাম না! আমরা এ কেমন মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী, মুক্তিযোদ্ধাকে সব কিছুর উর্ধ্বে রাখি যে মুক্তিযোদ্ধাকে শেষ নিঃশ্বাস নিতে দেই না দেশের মাটিতে? আমার কাছে তো মুক্তিযোদ্ধা মানেই মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের বীর। আমাদের অহংকার। দেশের সুর্যসন্তান। তিনি সরকারি দলের নাকি বিরোধী দলের সেটা তো বিবেচ্চ্য হতে পারে নাম। আমার কাছে মুক্তিযোদ্ধা মানে সরকারি কিংবা বিরোধী দল সবার উর্ধ্বে তাঁর আসন। আগে দেশ স্বাধীন তার পরে সরকারী দল কিংবা বিরোধী দল। আর দেশ স্বাধীন বললে যারাই স্বাধীন করতে অবদান রেখেছেন তারাই সর্বাগ্রে বিবেচ্য। এর পরেও যদি মুক্তিযোদ্ধাদের বিবেদের বেড়াজালে আটকে ফেলা হয় তাহলে সেটা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য। এরা আদতেই মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী নন, এরা স্বার্থান্বেষী। আপনি আওয়ামীলীগ করেন বলে বিরোধী দলের মুক্তিযোদ্ধাকে গালি দিতে পারবেন, নিজের দলের মুক্তিযোদ্ধাকে আসমানে তুলে রাখবেন। আপনি বিএনপি করেন বলে বিরোধী দলের মুক্তিযোদ্ধাকে গালি দিতে পারবেন, নিজের দলের মুক্তিযোদ্ধাকে আসমানে তুলে রাখবেন সেটার নাম মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করা নয়, অসম্মান করা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাইবো, মুক্তিযোদ্ধা খোকাকে দেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস নিতে দেয়া হোক। এই ব্যবস্থা করাই এখন মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী লোকদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। তা না হলে আপনারা শুধু মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী। খোকার শেষ ইচ্ছা পূরণ হোক।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *