ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪ মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে শনিবার রাতে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ধনতলা ইউনিয়নে ৯টি, চাড়োল ইউনিয়নে একটি ও পাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পাড়িয়া ইউনিয়নের জাউনিয়া কলেজপাড়া গ্রামের পুরোহিত শ্যাম বর্মণ বলেন, ‘শনিবার রাতে আমি মন্দিরে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছি। সব ঠিক ছিল। অনেকক্ষণ মন্দিরের সিঁড়িতে বসেও ছিলাম। সকালে খবর পাই মন্দিরের প্রতিমা ভেঙে পড়ে আছে। এটা ধর্মের অবমাননা। আমরা তো কারও ক্ষতি করি না। সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করি। যারা কাজটি করেছে প্রশাসন তাদের খুঁজে বের করে যেন শাস্তির আওতায় আনে।’

ধনতলা ইউনিয়নের পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিন্দুরপিন্ডি মন্দির কমিটির সভাপতি জোতিময় সিংহ বলেন, প্রায় অর্ধশত বছর ধরে আমরা মন্দিরে পূজা করে আসছি। কোনো দিন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আজ ভোর রাতে কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দিলিপ কুমার চ্যাটার্জী বাবু বলেন, কে বা কারা রাতে রাস্তার ধারে থাকা কয়েকটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। সকালে মন্দির কমিটির লোকজন খবর দিলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রশাসনকে জানাই।

খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আসলাম বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি আসলে দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। 

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সচেতনতামূলক কাজ করা হবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *