বান্দরবানে কেএনএর হামলায় দুই সেনাসদস্য নিহত

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত গুলিবর্ষণে সেনাবাহিনীর দুই সৈনিক নিহত হয়েছেন। এ সময় বাহিনীটির দুই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বুধবার (১৭ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রুমা উপজেলার সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়ি পাড়া নামক স্থানে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানার খবর আসে। এই সংবাদ পেয়ে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মঙ্গলবার (১৬ মে) দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানে যায়। টহল দলটি জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুইজন অফিসার ও দুই সৈনিক আহত হয়।

আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএ বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহিন অরণ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ সেনাসদস্যদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনীর প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।’

এর আগে চলতি বছরের মার্চে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কেএনএর অতর্কিত গুলিবর্ষণে সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন নিহত হন। আহত হন আরও দুই সেনাসদস্য।

আহতদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সিএমএইচ চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যায়। আহত অপর দুই অফিসার বর্তমানে চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে অভিযান পরিচালনা করছে। কেএনএফের কথিত সামরিক শাখার নাম কেএনএ। ইতিপূর্বে এ সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দেশের নতুন জঙ্গি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই আস্তানায় সমতল থেকে আসা জঙ্গিরা প্রশিক্ষণ নিত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে জানানো হয়েছে।

কেএনএফ নামের সংগঠনটি গড়ে ওঠে বান্দরবানের রুমা উপজেলায়। এর প্রধান রুমা উপজেলা সদর বাজারের বাসিন্দা নাথান বম। তিনি ২০১২ সালে কুকি চিন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনস (কেএনডিও) নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। সেটি পরবর্তী সময়ে কেএনএফ নামের সশস্ত্র সংগঠনে রূপান্তর করেন।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহীন অরণ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ সেনা সদস্যদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *