বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মারা গেছেন

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মারা গেছেন। বুধবার  ৯টা ৩০ মিনিটে গুলশানের নিজ বাসায় তিনি মারা যান। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মৃত্যুকালে এক ছেলে, এক মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে, ২০০৯ সালে তার সহধর্মিণী মৃত্যুবরণ করেন।

প্রবীণ রাজনীতিক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার দোগাছি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বহু আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া এই নেতা ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তার ঠিকানা ছিল মূলত কারাগার। বন্ধু মহলে কারাগারের পাখি বলে পরিচিত শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন জীবনে অন্তত ২০ বছর জেল খেটেছেন।

ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন তখনকার পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এদেশে অনেক প্রথিতযশা রাজনীতিক তৈরি করেছেন।

১৯৬৬ সালের ছয়দফা ও ১৯৬৯ সালের এগার দফার অন্যতম রূপকার শাহ মোয়াজ্জেম মহান মুক্তিযুদ্ধেরও অন্যতম সংগঠক। তিনি স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্বজনমত গঠনের জন্য ভারতীয় পার্লামেন্টে টানা আড়াই ঘণ্টা ভাষণ দেন। নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করা সে সময়ের জাতীয় নেতাদের মধ্যে অন্যতম শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।

১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীণ এই রাজনীতিক। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন তিনি।

তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভার একজন সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। কিন্তু তাঁকে ১৯৯২ সালে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন। তিনি দলটির ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আশির দশকে শাহ মোয়াজেম হোসেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব, এরশাদ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ উপনেতা ও উপ-প্রধানমন্ত্রী হন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *