:: কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
সেন্ট মার্টিনে রোববার বেলা দুইটা থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকার তাণ্ডব চলছে। এতে আহত হয়েছে ১৫ জন। প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার অন্তত ৩৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কয়েক শ গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল রিসোর্ট ও কটেজে অবস্থান করছেন স্থানীয় প্রায় ৬ হাজার মানুষ। বেশির ভাগই শিশু ও নারী।
বেলা দুইটার পর প্রবল গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। এতে লোকজনের ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে পড়ছে। গাছ পড়ে আহত হয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে একজন নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঝোড়ো হাওয়ায় সেখানকার ৩০০-৪০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু গাছপালা ভেঙেছে। গাছচাপায় এক নারীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তাঁকে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং এলাকাতে কিছু গাছপালা ভেঙেছে। সেখানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া জেলার অন্য কোথাও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের প্রধান সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনে ঝোড়ো হাওয়ায় সেখানকার প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া জেলার অন্য কোথাও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়ামিন বলেন, ‘যতদুর চোখ যাচ্ছে সব ধ্বংস হয়ে গেছে। অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ির চালা উড়ে গেছে। বাতাস এখনও থামেনি, তাই বাইরে বের হতে পারছি না। গাছ পড়ে অনেকে আহত হযেছে বলে খবর পাচ্ছি।’
উদয়-অস্ত রিসোর্টের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ’দ্বীপে প্রায় ২২০টি রিসোর্ট রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি। সামনে যা দেখছি, প্রায় সব স্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি ও বাতাস কমলে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানা যাবে।’
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ১৫ সদস্যের একটি দল সেন্টমার্টিনে আছে। তারা সবাই সুরক্ষিত আছে। তবে দ্বীপের বাসিন্দাদের অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি বলে খবর পেয়েছি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হবে সেটা আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
আজ বেলা সাড়ে ১২টার পর সেন্ট মার্টিনে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোকা। দুপুর দেড়টা থেকে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিকাল তিনটার পর জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়তে থাকে।
এদিকে বাতাসের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়দের অনেকের সঙ্গেই মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।