অভিনেতা অলিউল হক রুমি ইন্তেকাল করেছেন

:: নাগরিক বিনোদন ::

শরীরে ক্যানসারের সাথে লড়াই করে টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ অলিউল হক রুমি ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) ভোরে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

দীর্ঘদিন ধরে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন অলিউল হক রুমি। ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে থেকে দেশে ফিরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনেতা।

তার এক সময়ের নাট্যদল থিয়েটারের সহকর্মী আপন আহসান জানান, ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রুমি। সোমবার ভোর ৪টার দিকে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

“ক্যানসার ধরা পড়ার পর মাসখানেক আগে ভারতে গিয়েও চিকিৎসা করিয়েছেন। ঢাকার একটি হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন। সব চেষ্টা ব্যর্থ।”

তিন দশকের বেশি সময় অভিনয় করছেন রুমি। দীর্ঘ এ পথচলায় অভিনয় করেছেন বহু নাটক ও সিনেমায়। তার মৃত্যুর খবরে সহকর্মীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অনেকেই ফেসবুকে এ অভিনয়শিল্পীকে নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন।   

বরিশালের মানুষ জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি। মঞ্চ ও টিভি নাটকে মায়ের ভাষা দিয়েই তিনি দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এ ভাষাতেই তিনি দর্শককে হাসাতেন, কাঁদাতেন। নাটকে তার দেওয়া বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার কিছু কিছু ডায়ালগ আজও দর্শকদের মুখে লেগে আছে।

বরিশালের বরগুনায় জন্ম রুমির। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক। মা হামিদা হক। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন রুমি। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।

অভিনয়ের পাশাপাশি কাজ করেছেন ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এ। 

অভিনেত্রী ফারজানা চুমকি ফেসবুকে লিখেছেন, “রুমি ভাই শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন। ভালো থাকেন ওপারে। আমার জন্মদিনের প্রথম যে ফোনটি আসত সেটা আপনার ফোন। সেই কলটি আর আসবে না। সাব্বিরের (অভিনেতা মীর সাব্বির) সাথে অভিমান কে করবে রুমি ভাই। ক্ষমা করেন ভাই।”

অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব লিখেছেন, “টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ অলিউল হক রুমি ভাই কিছুক্ষণ আগে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”

অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী লিখেছেন, “রুমি ভাই বিদায়। আমার পরিচালনায় প্রথম ধারাবাহিক ‘সেলাই পরিবার’ নাটকের সময়টা মনে হচ্ছে খুব। আল্লাহ আপনাকে বেহেশত নসিব করুন।”

১৯৮৮ সালে রুমির অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। গত কয়েক বছর এই অভিনেতা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষাতে বেশি অভিনয় করে আসছিলেন। 

২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন রুমি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সাজেশন সেলিম’, ‘বোকাসোকা তিনজন’, ‘মেকআপ ম্যান’, ‘ঢাকা টু বরিশাল’, ‘ঢাকা মেট্রো লাভ’, ‘বাপ–বেটা দৌড়ের উপর’, ‘আমেরিকান সাহেব’, ‘জার্নি বাই বাস’, ‘বাকির নাম ফাঁকি’, ‘যমজ-৫ ’, ‘যমজ-৬ ’, ‘যমজ-৭ ’, ‘যমজ-৮’, ‘যমজ-৯ ’, ‘যমজ-১০ ’, ‘রতনে রতন চিনে’, ‘২০০ কদবেলী ইত্যাদি’, ‘সোনার শিকল’, ‘কমেডি ৪২০ ’, ‘প্রেসিডেন্ট সিরাজউদ্দৌলা’, ‘আকাশ চুরি’, ‘চৈতা পাগল’, ‘জীবনের অলিগলি’, ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ইত্যাদি।

টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও। ২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন রুমি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *