ইরানে জোড়া বিস্ফোরণ, নিহত ১০৩

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান কাশেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জোড়া বোমা হামলায় ১০৩ জন নিহত হয়েছেন।

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে অবস্থিত কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থল থেকে কয়েকশ মিটার দূরে সাহেব আল–জামান মসজিদে জমায়েত মানুষের ওপর এ হামলা হয়েছে। এতে ১৭৩ জন আহত হয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ কেরমান প্রদেশের ‘শহীদ গুলজার’ কবরস্থানের দিকে যাওয়ার পথে ওই বিস্ফোরণ ঘটে।

প্রথম বিস্ফোরণটি হয় সোলাইমানির সমাধি থেকে ৭০০ মিটার দূরে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি সমাধি থেকে এক কিলোমিটার দূরে।

কেরমান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নরকে উদ্ধৃত করে আইআরআইবি একে একটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বর্ণনা করছে। ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও অনলাইন মাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর মসজিদের আশপাশের সড়কে অসংখ্য ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে আছে।

দেশটির আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম নুরনিউজ বলছে, সমাধিস্থলের দিকে যাওয়ার রাস্তায় বেশ কয়েকটি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে।

কেরমান প্রদেশ রেড ক্রিসেন্টের প্রধান রেজা ফাল্লা রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, আমাদের উদ্ধার দলগুলো দ্রুত আহতদের সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সেখানে ভিড়ের কারণে চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানে আসা ব্যক্তিদের এলাকা থেকে সরে যেতে বলেছে।

তবে তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি আত্মঘাতী হামলা হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ইরানের কর্তৃপক্ষ বলছে, রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থার মাধ্যমে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে জেনারেল সোলাইমানির স্মরণসভায় বিস্ফোরণে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে তাসনিম নিউজ এজেন্সি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে।

কাশেম সোলাইমানিকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির জন্য হুমকি মনে করত ওয়াশিংটন। ২০২০ সালে সোলাইমানিকে গুপ্তহত্যার নির্দেশ দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাশেম সোলাইমানিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী’ বলেও বর্ণনা করেছিলেন ট্রাম্প।

লেবাননে হামাস নেতা সালেহ আল-আরৌরি হত্যায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে লেবানন। ইরানও এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছে। অথচ একদিন পরই কেরমানে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটল।  

এর আগে গত মাসে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বাইরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আইআরজিসির সিনিয়র উপদেষ্টা সাইয়েদ রাজি মুসাভি নিহত হন। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *