:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ইসরায়েলে বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। এটি ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।
দেশটির রাজধানী তেল আবিবের কর্মসূচিতে যোগ দেয় ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি আন্দোলনকারী। জোট সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয় তারা। একই ঘটনার প্রতিবাদে আরও তিন বড় শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করেছে দেশটির নাগরিকরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করা হয়। তিনি সেখানে বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুসারে এই পরিবর্তনগুলো আদালতের ক্ষমতা খর্ব করবে এবং সরকারের বিভিন্ন শাখার মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে।’
বিক্ষোভের আয়োজকরা জানান, সরকারের এই পরিকল্পনার প্রতিবাদে সারা দেশে টানা ১০ সপ্তাহ ধরে এ ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। এ সময়ের মধ্যে ইসরায়েলজুড়ে প্রায় ৫ লাখ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎস এই প্রতিবাদ সমাবেশকে ‘দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ’ বলে উল্লেখ করেছে।
গতকালও তেল আবিবে প্রায় ২ লাখ বিক্ষোভকারী জড়ো হন। তাদের অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা।
তামির গাইটসাবরি নামের একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘এটা বিচার ব্যবস্থার সংস্কার নয়। এটা হবে এক ধরনের বিপ্লব যার ফলে ইসরায়েলে সম্পূর্ণ একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি চাই আমার সন্তানদের জন্য ইসরায়েলে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকুক।’
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফায় এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেন ৫০ হাজারের মতো মানুষ।
বিরোধীদের ভাষ্য, প্রস্তাবিত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে নির্বাচিত সরকার বিচারক নিয়োগে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে এবং নির্বাহী বিভাগের ওপর সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে।
বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ বলেন, আমরা যখন সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হচ্ছি, অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছি প্রতিনিয়ত সেখানে সরকার দেশটির গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে। গতকালকেও ইরানের সঙ্গে সৌদির নতুন চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে যেটির দিকে নজর দেওয়া বেশী দরকার। সরকার ঘোষিত এই সংস্কার কার্যকর হলে নির্বাচিত সরকার তাদের পছন্দের বিচারক নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি সরকারের নির্বাহী কর্তাদের বিরুদ্ধ রুল জারির বিষয়েও সুপ্রীম কোর্টের ক্ষমতা হ্রাসের প্রস্তাব আনা হয়েছে এই সংস্কারের আওতায়।
গত বৃহষ্পতিবার বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ চালিয়ে যান। তবে সরকার বলছে এটিতে বিরোধীদলের উস্কানি রয়েছে। এর আগে রোববার এক পৃথক ঘটনায় ইসরায়েল বাহিনীর গুলিতে নাবলুসের পশ্চিম তীরে তিন ফিলিস্তীনির মৃত্যু হয়েছে।
সেনারা বলছে, তাদের তল্লাশী চৌকিতে বন্দুক হামলা চালানোয় পালটা জবাবে তারা এই হামলা চালিয়েছে। তবে ফিলিস্তীনিদের পক্ষ হতে এই ঘটনায় কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।