উখিয়ায় আগুনে ঘরছাড়া ১২ হাজার রোহিঙ্গা

:: কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

কক্সবাজারের উখিয়ার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। এতে ঘরছাড়া হয়েছেন প্রায় ১২ হাজার রোহিঙ্গা।অগ্নিকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে আটক করেছে বলে জানিয়েছে ৮ এবিপিএনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ। 

রোববার বিকেল ৩টার দিকে বালুখালীর ১১ নম্বর ক্যাম্পের বি ব্লকের একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন ৯, ১০, ১২ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা জানান, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আগুনের সূত্রপাতের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এটি নির্ধারণে সময় লাগবে।

আগুনে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) সিনিয়র সহকারী সচিব সরওয়ার কামাল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দুই হাজার বসতঘর পুড়ে গেছে। এটা আরও বাড়তে পারে। আমরা চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের জন্য কাজ করছি।’  

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘হঠাৎ করে আমার শিবিরে আগুন জ্বলে ওঠে। বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিস আসার আগে আমার লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।’

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ পর্যন্ত ২ হাজারের কাছাকাছি ঘর পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিশ্চিত করে বলতে সময় লাগবে। এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।’

ক্যাম্পের এই আগুনকে পরিকল্পিত নাশকতা বলছেন রোহিঙ্গারা। ওই ক্যাম্পের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবলু কামাল, আবদুল গফুর ও শামসুল আলম জানিয়েছেন, আরসা সন্ত্রাসীরা এ আগুন দিয়েছে।

আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান ও পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা।

এর আগে গত বছরের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীতে আগুনে পুড়ে মারা যান ১৫ জন রোহিঙ্গা। তখন ১০ হাজারের মতো বসতঘর পুড়ে যায়। ওই বছরের ২ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী ২০ নম্বর ক্যাম্পে জাতিসংঘ অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত করোনা হাসপাতালে আগুন লাগে। এতে কেউ হতাহত না হলেও হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারের ১৬টি কেবিন পুড়ে যায়।

ওই বছরের ৯ জানুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা নামের একটি শরণার্থী শিবিরে আগুনে প্রায় ৬০০ বসতঘর পুড়ে যায়।

এর আগে ২০২১ সালে ২২ মার্চ একই ক্যাম্পসহ পার্শ্ববর্তী তিনটি ক্যাম্পে বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। সে সময় আগুনে দশ হাজারেরও বেশি বসতঘর পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সদস্য গৃহহারা হয়েছিল। এ ছাড়া দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ ১৫ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *