এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রুয়ারি

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রুয়ারি এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা ৮ মার্চ সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রোববার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত সভায় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এতে সভাপতিত্ব করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আজ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি শিডিউল ঠিক করেছি, সে অনুসারে পরীক্ষা হবে। ভর্তি পরীক্ষার শিডিউলের পাশাপাশি কীভাবে মান উন্নয়ন করা যায়, কীভাবে আরও যুক্তিসংগত পরীক্ষা নেয়া যায়, যাতে ভালো ছাত্র ভর্তি হতে পারে- তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

এই পরীক্ষার এক মাস আগে থেকে অর্থাৎ আগামী ৯ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে।

সভায় জানানো হয়, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার পাশ নম্বর ৪০। মাইগ্রেশনের সুযোগ তিনবার রাখা হয়েছে। আর সব কলেজে একবারে চয়েস দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে। ৪ জানুয়ারি থেকে বিদেশি নাগরিকদের জন্য আবেদন নেয়া যাবে। আর দেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ১ জানুয়ারি আবেদন করা যাবে। অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ ২৩ জানুয়ারি।

এছাড়া ফি জমা দেয়ার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ জানুয়ারি। এ ক্ষেত্রে আবেদন ফি ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোল নম্বর ও সিট প্রদান ২৬ জানুয়ারির মধ্যে হয়ে যাবে। পাশাপাশি প্রবেশপত্র বিতরণ ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি আসনবণ্টন এবং ৯ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিলে ১০ নম্বর মাইনাস হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, গত পাঁচ বছরে মেডিকেল পরীক্ষার বিষয়ে কারও কোনো রকমের অভিযোগ ছিল না। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় যেটা দেখছি, সেটা কিন্তু ২০১০ সালের ঘটনা। ২০১০ সালের ঘটনা এখন বলা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে পরীক্ষা পদ্ধতি আমরা অনেক উন্নত করেছি। অত্যাধুনিক করা হয়েছে, এখানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়। যেখানে প্রশ্ন প্রস্তুত করা হয়, বিশেষ কয়েকজনের মধ্যে সেটা সীমাবদ্ধ থাকে। এমনভাবে করা হয়, ওখানে কেউ ঢুকতেও পারে না আর যারা প্রশ্ন তৈরি করে তারাও ওখান থেকে বের হয় না; প্রশ্ন বণ্টন হয়ে যাওয়ার পরে তারা বের হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘একজন প্রশ্নকারী একটা প্রশ্ন করে, অন্যরা সেটা জানেও না যে আরেকজন কী প্রশ্ন করল। যে পদ্ধতিতে প্রশ্নগুলো বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয় এবং যেভাবে খোলার ব্যবস্থা সেগুলো সবই ডিজিটাল পদ্ধতিতে। কেউ যদি আগে খোলার চেষ্টা করে, নেওয়ার চেষ্টা করে—ডিজি অফিসে ট্র্যাকিং সিস্টেম আছে।

‘আশা করি যেভাবে বিগত দিনগুলোতে করতে পেরেছি, সেভাবে করা হবে এবং সবার সহযোগিতা আমরা নেই। কোচিং সেন্টারগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিতে দেওয়া হয় না। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের কাছেও মোবাইল ফোন থাকে না,’ বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি মেডিকেলে অনিয়ম করার খুব একটা সুযোগ নেই। কারণ এখন মেরিট বেজ ভর্তি হয়। আমাদের মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর এ বিষয়ে তদারকি করে থাকে। বেসরকারি মেডিকেলগুলো অনেক মানসম্মত হয়ে গেছে।

‘আর যারা ভালো চালায় না, চালাতে পারে না; বিভিন্ন রকমের ঘাটতি রয়েছে আমরা তাদের বারবার তাগিদও দেই—যদি তারা তাদের ঘাটতি পূরণ না করে আমরা তাদের বন্ধ করে দেই। ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ-ছয়টি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কোনো আপত্তি জানায়নি। তারাও চায় যে, তাদের সুনাম অক্ষুণ্ন থাকুক,’ বলেন জাহিদ মালেক।

এমবিবিএস এ আসন সংখ্যা নিয়ে জাহিদ মালেক জানান, গতবছরের তুলনায় এই বছর ১ হাজার ৩০টি সিট বাড়ানো হয়েছে। সরকারি মেডিকেলে ৫ হাজার ৩৮০টি সিট রয়েছে। বেসরকারিতে ৬ হাজার ৩৪৮টি আছে। আর্মি মেডিকেলে ৩৭৫টি সিট রয়েছে। এ সময় ১ মাস পর ডেন্টাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশন এর সভাপতি মুবিন খান, বিএমআরসি প্রতিনিধি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ্, সিলেট ওসমানী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এনায়েত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *