ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়াই এবারের বিশ্বকাপ

:: ক্রীড়া ডেস্ক ::

ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়াই এবার ভারতে বসবে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। জিম্বাবুয়েতে এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা তৃতীয় হার ক্যারিবীয়দের হৃদয় ভেঙে দিল।

শনিবার হারারেতে বিশ্বকাপ বাছাই সুপার সিক্সে স্কটল্যান্ডের কাছে সাত উইকেটে হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নিয়েছে মোট ১০ দল। এই দশ দলের মধ্য থেকে বিশ্ব আসরে অংশ নেবে দুই দল। সুপার সিক্স পর্যন্ত লড়াইয়ে সবচেয়ে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা এবং স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। অসম্ভব কিছু না হলে এই দুই দলই খেলবে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব আসরে।

১৯৭১ সালের ৫ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক ওয়ানডের যাত্রা। এর চার বছর পর ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে বসে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের আসরের শিরোপাও উইন্ডিজের। সেই মহাপরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজই ২০২৩ সালের ভারত বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন বিদায় হয়তো প্রত্যাশিত ছিল না। তবে একেবারে বিনা মেঘে বজ্রপাতও ছিল না। কারণ, এ দলটা ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর কোনো আইসিসি ইভেন্টে ভালো কিছু করতে পারেনি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই চক্রেই ৯ দলের মধ্যে তাদের অবস্থান ছিল ৮ নম্বরে। এর আগের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১০ দলের মধ্যে তাদের অবস্থান ছিল ৯ নম্বরে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তাদের অবস্থা এমনই। বড় বড় তারকাদের নিয়েও ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে মাত্র ১ ম্যাচ জিতেছিল ক্যারিবিয়ানরা। আর সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো মূল পর্বটা খেলতেই পারেনি। এর আগে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও খেলতে পারেনি তারা।

হারারেতে আজ শুরু থেকেই ব্যাকফুটে উইন্ডিজ শিবির। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমেই দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ৬ বলে কোনো রান না করেই বিদায় নেন জেসন চার্লস। তার দেখানো পথেই দ্রুত ফিরেন শামারাহ ব্রুকস। এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকেন ক্যারিবিয়ানরা। ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দলীয় রান তিন অঙ্কে পৌঁছাবে কিনা তা নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। 

সেখান থেকে দলকে ১৮১ রানের স্কোর এনে দেন সপ্তম উইকেটে দুর্দান্ত জুটি গড়া জেসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ড। শেফার্ড ৩৬ রানে আউট হয়ে গেলে তাদের ৭৭ রানের জুটি ভেঙে যায়। সতীর্থের আউটের পর ৪৫ রানে ফেরেন হোল্ডারও। দুজনই দলীয় ১৫৮ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ১৮১ রান করতে পারে ক্যারিবিয়ানরা। ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেন।

কম রানের লক্ষ্যে দিয়েও শুরুটা ভালো করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের প্রথম বলেই ওপেনার ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইডকে আউট করেন হোল্ডার। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ১৭৫ বলে ১২৫ রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াই থেকে ছিটকে দেন ওপেনার ম্যাথু ক্রস ও ম্যাকমুলেন। দুজনই জোড়া হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। ৮ চার ও ১ ছক্কায় ম্যাকমুলেন ৬৯ রানে থামলেও ৩৯ বল বাকী থাকতে স্কটিশদের জয় নিশ্চিত করেন ক্রস। ৭ চারে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন ক্রস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোল্ডার-শেফার্ড ও আকিল ১ করে উইকেট নেন।

১৯৭৫ এ শুরু হওয়া একদিনের বিশ্বকাপ ও ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া টি ২০ বিশ্বকাপে এই প্রথম খেলতে ব্যর্থ হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রুপপর্বে জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই কঠিন করে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সুপার সিক্সে উঠলেও পুরানদের ঝুলিতে কোনো পয়েন্ট ছিল না। 

অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলংকা চার পয়েন্ট নিয়ে উঠেছিল সুপার সিক্সে। সেখানে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জেতে এই দুদল। ফলে স্কটল্যান্ডের কাছে হারলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায় নিশ্চিত ছিল। সেটাই হলো।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *